যেকোনো খামারে “অল ইন অল আউট” সিস্টেম অনুসরণ করতে হবে। “অল ইন অল আউট” মানে হচ্ছে খামারের একসাথে বাচ্চা তোলা এবং সেই বাচ্চা একসাথেই বিক্রি করে দেয়া। অর্থাৎ বিভিন্ন বয়সী বাচ্চা খামারে না রাখাই ভাল। খামারে একটা ব্যাচ পালন করে বিক্রি করার পরে কমপক্ষে ১৪ দিন গ্যাপ দিয়ে তারপরে নতুন বাচ্চা তুলতে হবে। এতে শুধু রোগ প্রতিরোধই করে না ; সাথে সাথে রোগ জীবাণু ও ধ্বংস করে।
খামারের সেড পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করা যেতে পারেঃ
সেড খালি হওয়ার সাথে সাথে খামারের সেডের ভিতরের সকল যন্ত্রপাতি ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র বের করে ফেলতে হবে।
পুরাতন লিটার খামার থেকে কমপক্ষে ৫০০ মিটার দূরে নিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে গর্ত করে ফেলতে হবে।
সেডের দেয়াল,পর্দা ভেন্টিলেটর , দরজা, জানালা, ফ্যান, লাইট সব কিছু ঝেড়ে মুছে পরিষ্কার করতে হবে।
সেডে কোনো মেরামত বা সংস্কার প্রয়োজন হলে তা করতে হবে।
প্রথমে পরিষ্কার পানি নিয়ে মেঝে, দেয়াল, খাবার ও পানির পাত্র পরিষ্কার করতে হবে।
এরপরে জীবাণুনাশক (পভিসেপ,জিপিসি-৮,ভাইরোসিড,বায়োডিন,টিমসেন,পটাশ ইত্যাদি) মিশ্রিত পানি দিয়ে সেডের মেঝে, দেয়াল, খাদ্যের পাত্র, পানির পাত্র, পর্দা, ও অন্যান্য জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে হবে।
ভিজা মেঝের উপরে ১০০ বর্গফুট জায়গায় ১ কেজি হারে কস্টিক সোডা ছিটিয়ে দিতে হবে। এবং মেঝে শুকানোর পরে আবার হাল্ক পানি স্প্রে করে মেঝে ভাল করে ঘষে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে হবে।
সেড কে আরো কঠোরভাবে জীবাণুমুক্ত করতে এবং খামারের নিরাপত্তা আরো নিশ্চিত করতে সেডে ফিউমিগেশন করতে হবে।
ফিউমিগেশন করার জন্য শেডের সকল পর্দা দরজা জানালা আটকিয়ে ঘরের ভিতরে কয়েকটি জায়গায় মাটির পাত্রে প্রতি ১০০ ঘনফুট জায়গার জন্য ৬০ গ্রাম পটাশ এবং ১২০ মিলি ফরমালিন দিয়ে ধোয়া তৈরি করতে হবে। এবং পরের দিন সকল পর্দা উঠিয়ে দিয়ে ধোয়া বের করে দিতে হবে। এতে সেডে থাকা সকল জীবাণু ধ্বংস হয়ে যাবে।
সোনালি মুরগির খামার
সেডের চারিপাশে কমপক্ষে ৫-৬ ফুট জায়গার সকল ঘাস কেটে এবং মুরগির কোনো ময়লা থাকলে তা পরিষ্কার করে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে দিলে ভাল হয়।
খামারে নতুন বাচ্চা উঠানোর ৬ দিন পূর্বে আবার বাচ্চার ব্রুডারের জিনিসপত্র জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি দিয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে রাখতে হয়
ফার্মে বাচ্চা আসার ১ সপ্তাহ আগে লিটারের তুষে হাল্কা করে জীবাণুনাশক স্প্রে করে শুকিয়ে জীবাণুমুক্ত করে রাখতে হবে।
খামারে বাচ্চা আসার পূর্বে খামারের সামনের ফুটবাথে জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি দিতে হয়
এবং এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহে ২-৩ দিন সেডের আশেপাশে এবং খামারের আশেপাশের জীবাণুনাশক স্প্রে করতে হবে।
খামারে এবং সেডের ভিতরে বাইরে থেকে আসা কোনো ভিজিটরকে প্রবেশ করতে দেয়া উচিত নয়।
লেখকঃ ডাঃ শ্রাবণ হাসান সজল
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২