যেভাবে একটা বাণিজ্যিক ছাগলের খামার গড়ে তুলবেন

1134

received_2343671855730345বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগলের খামার গড়ে তুলতে করণীয় সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই জানা নেই। আমাদের দেশে ছাগল পালন একটি লাভজনক পেশা। ছাগল পালন করে অনেকেই তাদের দারিদ্রতা দূর করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ছাগল পালন করা হয়ে থাকে। আসুন জেনে নেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগলের খামার গড়ে তুলতে করণীয় সম্পর্কে-

বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগলের খামার গড়ে তুলতে করণীয়ঃ
বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ছাগলের খামার গড়ে তুলতে যেসব বিষয় বিবেচ্য-

কম খরচে আধুনিক শেড তৈরি করতে হবে।
খামারে জন্য খাদ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে।
খামারে ভালো জাতের পাঁঠা রাখতে হবে।
খামারে ভালো জাতের পাঁঠি রাখতে হবে।
কৃমির ওষুধ নির্দিষ্ট সময় পর পর দিতে হবে।
খামারে প্রোডাকশন রেকর্ড রাখতে হবে।
খামারে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে।
সঠিক সময়ে গাভিন করাতে হবে।
খামারে বাচ্চার মৃত্যুর হার কমাতে হবে।
দ্রুত ওজন বৃদ্ধি ও সঠিক সময় বিক্রয় উপযুক্ত করতে হবে।
আধুনিক শেড তৈরিঃ

ষ্টল ফিডিং শেড বানাতে হবে যেখানে ছাগল মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াবে গলায় কোনো দড়ি থাকবে না। এই পদ্ধতিতে ছাগল সব সময় মাচা থাকবে মাঝে মধ্যে নির্দিষ্ট উঠান বা padock এ ঘুরে বেড়াবে। এতে ছাগলের রোগ বালাই কম হবে এবং ছাগলের বৃদ্ধি দ্রুত হবে।

খামারের জন্য খাদ্য উৎপাদনঃ

ছাগলের খামারে Corn silage ও Legume Hay এর বিকল্প নেই। এতে একমাত্র খাবার খরচ কমানো যায়। প্রতিদিন ২ থেকে ৫ কেজি corn silage ও ০.৫ থেকে ১ কেজি legume hay দিলে দানাদার খাবার না দিলেও চলবে। নিজে জমি লিজ নিয়ে করতে পারলে এতে খাবার খরচ অনেক কমে যাবে।

ভালো জাতের পাঁঠা নির্বাচনঃ

একটা পাঠা একটা ফার্ম এর ভিত্তি। একটা পাঠি বছরে ২ থেকে ৪ টা বাচ্চা দেয় কিন্তু একটা পাঠা বছরে ৫০-৮০ টি বাচ্চা প্রোডাকশন দেয় এবং তাদের প্ৰডাকশন এর জন্য সরাসরি দায়ী। তাই পাঠা যদি কোনো কারণে জেনেটিক সমস্যা থাকে তা ঐ ফার্ম কে ধংস করার জন্য যথেষ্ট এবং যত প্রোডাকশন হবে ওই পাঠা দিয়ে সবগুলোতে ঐ সমস্যা থেকে যাবে। পাঁঠা নির্বাচনে নিচের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে-

পাঠা জন্ম ওজন
জন্মের সময় কয়টি ভাই বোন হয়েছিল।
জন্মের সময় কোনো জটিলতা ছিল কিনা মায়ের
৩ মাসের সময় তার ওজন কতটুকু ছিল ও ১ বছর বয়সে কত হলো
তার মায়ের রেকর্ড কয়টি করে বাচ্চা দেয়। প্রথম গাবিন কত বছর বয়সে হয়েছে
পাঠার বাবা মায়ের ৩ পুরুষের রেকর্ড যদি সম্ভব হয় সাথে ছবি যদি থাকে ( শুধু ইমপোর্টেড সিমেন বা পাঠার ক্ষেত্রে পাওয়া যাবে তাই pedigree কনফার্ম করে সিমেন দিবেন )
পাঠার বুকের দিকে যত চওড়া হবে তার immunity সিস্টেম তত ভালো হবে রোগ বালাই তত কম হবে। দীর্ঘ ও প্রস্থ যত বেশি হবে তত মাংস বেশি হবে। অন্ডকোষ বড় ও চওড়া ও সমান হতে হবে।
মুখের গড়ন ঠিক হতে হবে। নিচের চোয়াল ও উপরের পাটি যেন সমান হয়। নিচের চোয়াল কখন ছোট বা বড় হতে পারবেনা। তাতে তারা মাঠে চরে খেতে পারবেনা।
এখানে একটা লিংক দেয়া হলো ব্রিডিং বাক বা পাঠা কিভাবে নির্বাচন করতে হবে।
ভালো মানের পাঁঠিঃ

পাঠির জন্ম ওজন
জন্মের সময় কয়টি ভাই বোন হয়েছিল।
জন্মের সময় কোনো জটিলতা ছিল কিনা মায়ের
৩ মাসের সময় তার ওজন কতটুকু ছিল ও ১ বছর বয়সে কত হলো
তার মায়ের রেকর্ড কয়টি করে বাচ্চা দেয়। প্রথম গাবিন কত বছর বয়সে হয়েছে
পাঠির বাবা মায়ের ৩ পুরুষের রেকর্ড যদি সম্ভব হয় সাথে ছবি যদি থাকে।
পাঠার বুকের দিকে যত চওড়া হবে তার immunity সিস্টেম তত ভালো হবে রোগ বালাই তত কম হবে।
মুখের গড়ন ঠিক হতে হবে। নিচের চোয়াল ও উপরের পাটি যেন সমান হয়। নিচের চোয়াল কখন ছোট বা বড় হতে পারবেনা। তাতে তারা মাঠে চরে খেতে পারবে না।
কৃমির ওষুধ খাওয়ানোঃ

প্রতি ৩ মাস পরপর ক্রিমি নাশক ব্যবহার করতে হবে। একএক বার এক এক গ্রুপ ব্যবহার করতে হবে আর বাচ্চাদের প্রতি মাসে একবার ৬ মাস পর্যন্ত। মাঝে মধ্যে পায়খানা ল্যাব টেস্ট এ পাঠাতে হবে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে।

খামারে প্রোডাকশন রেকর্ড রাখাঃ

এটা খুব জরুরি। প্রতিটি ছাগল কে ear tag করে তার জন্ম তারিখ, জন্মের সময় ওজন, কয় ভাই ও বোন ( তাদের ও রেকর্ড ) ৩ মাসে কতটুকু ওজন হলো, ভ্যাকসিন কি কি দেয়া হলো, ক্রিমি নাশক কবে দেয়া হয়েছিল, বাবা কে মা কে ইত্যাদি।

নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবেঃ

ছাগলের খামারে রোগ প্রতিরোধে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে হবে।

সঠিক সময়ে গাভিন করাতে হবেঃ

সঠিক সময় গাভিন না হলে বিসনেস লস হবে সে ক্ষেত্রে পাটি বাচ্চা বয়স ২ মাস হলে এক্সট্রা দানাদার খাবার দিয়ে বডি কন্ডিশন ৪ এ নিতে হবে সাথে মিনারেল ও ADE৩ দিতে হবে। তাও যদি না হয় হরমন ব্যবহার করে গাভিন করতে হবে। প্রতি ৮ মাসএ বাচ্চা প্রোডাকশন করতে হবে নইলে লস হবে।

খামারে বাচ্চার মৃত্যুর হার কমাতে হবেঃ

ছাগলের খামারে লাভবান হতে চাইলে খামারে বাচ্চার মৃত্যুর হার কমাতে হবে।

ওজন বৃদ্ধি ও বিক্রির উপযোগীঃ

ছাগলের খামারে লাভবান হতে চাইলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি ও সঠিক সময় বিক্রয় উপযুক্ত করতে হবে। ভালো জেনেটিক্স ও সঠিক খাদ্য ব্যবস্থা করতে হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৮জানু২০২০