আমাদের দেশের একটি পরিচিত শাক পুঁইশাক। শাক জাতীয় তরকারীর মধ্যে পুঁইশাক হল সবার সেরা। পুঁইশাক একটি পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু শাঁক। আমাদের দেশে প্রায় সব স্থানেই পুঁইশাকের চাষ করা হয়।
পুইশাক চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহারে পুইশাকের পাতা আকারে ছোট আর পাতায় সহজেই দাগে ভরে যায়। ফলে খেতে বিষাদ লাগে, সহজে হজম হতে চায় না। আর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্হা ভালো না হলে প্রায়শই গোড়া পঁচে যায়।
আসুন জেনে নেই রাসায়নিক সার ছাড়া পুঁইশাক চাষ করার পদ্ধতি–
পুঁইশাক এর উল্লেখযোগ্য জাত
রঙ ভেদে দু´ধরনের পুইশাক দেখা যায়। লাল ও সবুজ। লাল রঙের জাত হল মনীষা। সবুজ রঙের জাতের মধ্যে ভাল বারি পুইশাক ১(চিত্রা)। সবুজ রঙের পুঁইশাকের আরও বিভিন্ন ধরণের জাত রয়েছে। তাঁর মধ্যে রয়েছে মাধুরী, গ্রীণ লিক, মোটালতা, রূপসা গ্রিন ইত্যাদি।
প্রয়োজনীয় জলবায়ু ও মাটি
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে পুঁইশাক জন্মে। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া এবং রোদ পুঁইশাক গাছের পছন্দ। কম তাপমাত্রায় গাছের বৃদ্ধি ও ফলন কম হয়। সব ধরনের মাটিতেই পুঁইশাক জন্মে। তবে পুঁইশাক সুনিকাশনযুক্ত বেলে দোআঁশ থেকে এটেল দোআঁশ মাটিতে সবচেয়ে ভাল হয়। তাই টবে পুঁইশাক চাষের ক্ষেত্রে দো-আঁশ, বেলে দো-আঁশ ও এঁটেল মাটি ব্যবহার করা ভালো ।
পানি নিষ্কাশন ও বীজ রোপন
রাসায়নিক সার ছাড়া পুইশাক চাষে প্রথমেই ভালো পানি নিষ্কাশনের জন্য ছোট একটি ফলের কেরেটে সিমেন্টের বস্তা বিছিয়ে এতে বেলে দোঁয়াশ মাটির সাথে ৫০ ভাগ গোবড় সার মিশাতে হবে। এর পর সার মিশানো মাটির ওপর বীজ ছিটিয়ে দিয়ে তার ওপর আবার হালকা করে মাটি দিয়ে পানি দিতে হবে।
এতে এক সপ্তাহ পর ছিটানো বীজ থেকে সবল চারাগুলো বের হয়ে আসবে। এর পর পুঁইশাকের চারাগুলো কড়া রোদে রেখে দিতে হবে। সেই সঙ্গে বৃষ্টির পানির ছোঁয়ায় সুস্থ সবল চারাগুলো বড় হতে থাকবে। কিছু দিন পর দাগবিহীন আর আকাড়ে বড় পাতাগুলো দেখলেই মন ভরে যাবে।
আগাছা ও নিড়ানি
টবের ভিতরে আগাছা জমতে পারে তাই খেয়াল করে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। ফলন বেশি পেতে হলে বাউনি দিতে হবে। পুঁইশাক গাছের গোড়ায় কখনই পানি জমতে দেয়া যাবে না। তাহলে গাছের গোড়া পচে যেতে পারে। আবার অনেক বৃষ্টিপাত হলে দেখা যায় যে গোড়ার মাটি ধুয়ে যায়। তাই বৃষ্টির পর গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে চেপে দিতে হবে। চারা ২৫-৩০ সেন্টিমিটার উঁচু হলে আগা কেটে দিতে হবে, এতে গাছ ঝোপালো হয়।
রাসায়নিক সার মুক্ত, দাগবিহীন আর আকাড়ে বড় পাতাগুলো তুলে খেয়ে দেখুন। স্বাদে বেশ লাগবে !
ফার্মসএন্ডফার্মার/২ফেব্রু২০২০