আজ খামারীদের আরো একটি অপ্রয়োজনীয় মেডিসিনের ডোজের বিষয়ে বলবো। আর সেটি হলো ভিটামিন বি ১, বি ২ এর ডোজ। প্রায় ৯৯% খামারীই বিভিন্ন বয়সে বিশেষ করে প্রথম ১০ দিনের মাঝে বি ১ ও বি ২ প্রিপারেশনের মেডিসিন দিয়ে একটি ডোজ করে। তাদের ধারনা এই ডোজটি করে দিলে মুরগীর আর কোন প্যারালাইসিস হবে না, মুরগীর পা খোঁড়া হবে না। অর্থাৎ তাদের মতে ভিটামিন বি ১ বা বি ২ আগে থেকে দিয়ে দিলে এগুলো শরীরে জমা থাকবে এবং এগুলোর ভবিষ্যতে অভাবজনিত মুরগীর প্যারালাইসিস হবে না।
কি হাস্যকর থিউরী!!! আসলে খামারীদের আর কি দোষ? দু একটি মেডিকেল টার্ম জানা ননটেকনিক্যাল প্রতিনিধিগন যেভাবে খামারীদের বুঝায় খামারীও যেভাবে বুঝে!
আসল কথায় আসি। দুনিয়াতে সমস্ত ভিটামিনকে প্রধান ৬ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. ভিটামিন এ
২. ভিটামিন বি (বি ১, বি ২, বি ৬ ইত্যাদি)
৩. ভিটামিন সি
৪. ভিটামিন ডি
৫. ভিটামিন ই
৬. ভিটামিন কে
এই ৬ ধরনের ভিটামিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১. ফ্যাটে দ্রবীভুত
২. পানিতে দ্রবীভুত
১. ফ্যাটে দ্রবীভুত ভিটামিনঃ
এগুলো শরীরে অবস্থিত ফ্যাট বা চর্বির সাথে মিশে যায় এবং শরীরে জমা থাকে। এবং শরীরে কখনো এই সব ভিটামিনের অভাব দেখা দিলে আগে থেকে শরীরে জমা থাকা এই ভিটামিনগুলো সেই অভাব পুরন করে। যেমনঃ ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে।
পানিতে দ্রবীভুত ভিটামিনঃ
এই গ্রুপের ভিটামিনগুলো পানিতে দ্রবীভুত হয়। এবং শরীরে জমা থাকে না। যেমনঃ ভিটামিন বি ও ভিটামিন সি।
যেহুতু এগুলো শরীরে জমা থাকে না তাই এই ভিটামিনগুলো প্রতিদিন খাবারের সাথে খেতে হয়। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো আপনি যদি কোন দিন আপনার প্রয়োজনের চেয়ে বেশী ভিটামিন বি বা ভিটাসিন সি খেয়ে ফেলেন তবে আপনার শরীরে ঐদিন যতটুকু ভিটামিন বি বা ভিটামিন সি’র প্রয়োজন ছিল ততটুকুই শরীরে শোষিত হবে। বাকি অংশটুকু প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যাবে। এই ভিটামিন গুলো শরীরে জমা হয়ে ভবিষ্যতের জন্য অভাব পুরন করে না।
তাই যারা আগে থেকে প্যারালাইসিস প্রতিরোধ করার জন্য ভিটামিন বি খাওয়ান তারা মেডিসিন খরচ বৃদ্ধি ছাড়া আর কিছুই করেন না।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৭ফেব্রুয়ারি২০২১