যে জাতের ছাগল পালন করলে বেশী লাভ হবেন

997

ছাগল পশ্চিমবঙ্গের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রাণীসম্পদ। আমদের দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস ছাগল পালন। এটি একমাত্র ব্যবসা যা স্বল্প ব্যয়, অপেক্ষাকৃত কম রক্ষণাবেক্ষণ ও ছোট জায়গায় করা সম্ভব। স্বল্প বিনিয়োগের পরেও এটি একটি লাভজনক ব্যবসা হিসাবে প্রমাণিত। পশুপালকরা ভারতের বিশেষ ছাগল প্রজাতির পালন করে উল্লেখযোগ্য লাভ করতে পারেন।

ছাগল পালনের সুবিধাদি (Benefit of goat rearing) –

ছোট প্রাণীর খোরাক তুলনামূলকভাবে অনেক কম, পালনের জন্য অল্প জায়গা লাগে এবং মূলধনও সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের মধ্যে থাকে।

গবাদি পশুর তুলনায় ছাগলের রোগ বালাই কম।
তুলনামূলক কম সময়ে অধিক সংখ্যক বাচ্চা পাওয়া যায়। বছরে দু’বার বাচ্চা প্রসব করে এবং প্রতিবারে গড়ে ২-৩ টি বাচ্চা হয়ে থাকে।

দেশে ও বিদেশে ব্ল্যাক ছাগলের চামড়া, মাংস ও দুধের বিপুল চাহিদা আছে।
ছাগলের দুধ যক্ষ্মা ও হাঁপানি রোগ প্রতিরোধক হিসাবে জনশ্রুতি রয়েছে এবং এজন্য এদের দুধের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে।

ছাগল ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষীদের অতিরিক্ত আয়ের উৎস হিসাবে বিবাচিত হয়।

ছাগল পালন অনেকেই করে থাকেন, তাতে মুনাফাও হয়। কিন্তু এই লাভজনক ব্যবসায় অধিক মুনাফা করতে হলে পশুপালককে জানতে হবে কোন প্রজাতির ছাগল তাকে পালন করতে হবে। এ সম্পর্কে একটা সম্যক জ্ঞান থাকা দরকার।

আজ এই নিবন্ধে এমন কয়েকটি বিশেষ ছাগলের জাত সম্পর্কে তথ্য দেওয়া হল, যা অনুসরণ করে ব্যক্তি ভাল উপার্জন করতে পারেন-

ভারতীয় ছাগলের প্রধান প্রজাতি:

বিটল ছাগল (Beetal Goat) –

বিটল জাতের ছাগলগুলি মূলত পাঞ্জাব প্রদেশের গুরুদাসপুর জেলার বটালা মহকুমায় পাওয়া যায়। এই জাতের ছাগলগুলি পাঞ্জাব সংলগ্ন পাকিস্তানের কয়েকটি অঞ্চলেও পাওয়া যায়। এদের গাত্রে বাদামি বর্ণের দাগ বা কালো বর্ণের উপর সাদা বর্ণের দাগ পরিলক্ষিত হয়। এরা প্রতিদিন ২.৫ -৪ লিটার পর্যন্ত দুধ দিতে পারে। দৈহিক ওজন ছাগীর ক্ষেত্রে ৪৫ কেজি এবং ছাগের ক্ষেত্রে ৬৫ কেজি পর্যন্ত হয়।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল (Black Bengal Goat) –

এই জাতের ছাগলগুলি পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, আসাম, উত্তর উড়িষ্যা এবং বাংলায় পাওয়া যায়। সাধারণত ১২-১৫ মাস বয়সে প্রথম বাচ্চা দেয়। একটি ছাগী বছরে দু’বার বাচ্চা প্রসব করলেও উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় একটি ছাগী থেকে ২-৮ টি পর্যন্ত বাচ্চা পাওয়া যেতে পারে।

২০ কেজি দৈহিক ওজন সম্পন্ন একটি ছাগী থেকে কমপক্ষে ১১ কেজি খাওয়ার যোগ্য মাংস এবং ১-১.৪ কেজি ওজনের অতি উন্নতমানের চামড়া পাওয়া যায়। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়া একটি অতি মূল্যবান উপজাত। সেমি-ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে ২৫ টি ছাগীর খামার থেকে প্রথম বছরে ৫০,০০০ টাকা, দ্বিতীয় বছরে ৭৫,০০০ টাকা এবং তৃতীয় বছরে ১,০০০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।

বার্বারি ছাগল (Barbari Goat) –

বার্বারি মূলত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকাতে পাওয়া যায়। উত্তর প্রদেশের আগ্রা, মথুরা এবং সংলগ্ন অঞ্চলেও এই প্রজাতির ছাগল পাওয়া যায়। দৈহিক ওজন ছাগীর ক্ষেত্রে ৩০-৩৫ কেজি এবং ছাগের ক্ষেত্রে ৪০ কেজি পর্যন্ত হয়। বছরে ৪ টি বাচ্চা প্রসব করতে পারে। এই জাতের ছাগল প্রতিদিন ১ কেজি পর্যন্ত দুধ দিতে পারে।

তথ্যসূত্রঃ কৃষি জাগরণ

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৪অক্টোবর২০