যে বিষয়গুলো না জানলে পোলট্রি খামার শুরু করা উচিত নয়

316

অনেক ভাই গত কয়েক সপ্তাহের “যে বিষয়গুলো না জানলে খামার শুরু করা উচিত নয়”… শিরনামের ১৫ টি পয়েন্টের যেগুলো আলোচনা বাকি আছে সেগুলো বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন, পুর্বে ৫ টি পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি আজকে ৬ নং পয়েন্ট নিয়ে যতটুকু জানি আলোচনা করবো ইনশা আল্লাহ।।

৬. খামারের শীত, বর্ষা এবং গরমকালীন ব্যবস্থাপনা।
পোলট্রি খামারে শীত,বর্ষা এবং গরমকালে বিশেষ যত্ন না নিলে ফ্লকে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। যেমন – মুরগির দৈহিক ওজন কমে যাওয়া, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ ডিম উৎপাদন কমে যায় এবং মোরগ-মুরগির মৃত্যুও হতে পারে। তাই এই সময় ঋতুভেদে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

শীতকালীন ব্যবস্থাপনা।
* শীতকালে ঘরে অবশ্যই ছালার বা চটের পর্দা ঝুলাতে হবে।
* শীতকালে ব্রুডিং করার সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাবল করে চটের পর্দা সেলাই করে তবেই পর্দা ঝুলাতে হবে। অতিরিক্ত শীতে চিক গার্ডের চারদিকে এবং উপরে মশারীর মত করে চটের পর্দা ঝুলানো যেতে পারে।
* শীতকালে ব্রুডার বক্সে ২০০ ওয়াটের বাল্ব লাগিয়ে ব্রুডিং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এছাড়াও তাপ দেওয়ার ঘরে অতিরিক্ত কিছু বাল্ব রিফ্লেকটারসহ নিচু করে ঝুলানো যেতে পারে এবং প্রয়োজন অনুসারে এগুলো জ্বালাতে হবে।
* শীতকালে ব্রুডিং তাপমাত্রা কম হলে বাচ্চা এক জায়গায় জড়ো হয়ে গাদাগাদি করে থাকে, বিশেষ করে রাতের বেলায় এবং এতে করে নিচে চাপে পড়ে শ্বাস বন্ধ হয়ে অনেক বাচ্চা মরে যেতে দেখা যায়। তাই মাঝে মাঝে বাচ্চাগুলোকে নাড়িয়ে দিতে হবে যেন অনেকক্ষণ

একসাথে গাদাগাদি করতে না পারে।
* যারা লিটারে মুরগী পালন করেন লিটার বেশী করে দিতে হবে কমপক্ষে ৩ ইঞ্চি।
* গরমের দিনের তুলনায় শীতের দিনে একটু বেশি খাবার সরবরাহ করতে হবে।
বর্ষকালীন ব্যবস্থাপনা।
* বর্ষকাল শুরু হওয়ার আগেই খামারের ছাওনিতে যেকোনো ছিদ্র মেরামত করে নিতে হবে।
* লিটারের ক্ষেত্রে, জানালা এবং ঘরের পাশ দিয়ে বৃষ্টির পানি ঢোকার সম্ভাব্য সব ছিদ্র বন্ধ করার সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে খামারসহ খাবারের পাত্র যথাসম্ভব শুষ্ক থাকে।
* পোল্ট্রি শেডের আশেপাশে যাতে বৃষ্টির পানি জমে না থাকে সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না হলে বিভিন্ন রোগ-বালাই শেডে প্রবেশ করতে পারে।

গরমকালে ব্যবস্থাপনা।
* অতিরিক্ত গরমে প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্যান ব্যবহার করা যেতে পারে।
* গরমে হিটস্ট্রোক প্রতিরোধে ঠান্ডা পানিতে ভিটামিন সি/স্যালাইন দেওয়া যেতে পারে।
* দিনের বেশী গরমের সময় ফিড না দেওয়াই ভালো। দিনের ঠাণ্ডা সময় যেমন ভোর ও সন্ধ্যার পর ফিড দিতে হবে।
* শেডে মোরগ-মুরগি যেন আরামদায়ক পরিবেশে বাস করতে পারে সেদিকে নজর দিতে হবে। অহেতুক এদের বিরক্ত করা যাবে না। কম জায়গায় বেশী মুরগী রাখা যাবে না। অধিক রোদে টিনের চালা অতিরিক্ত গরম হলে দিনে দুই-একবার চালায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। টিনের চালার নিচে চাটাই, হার্ডবোর্ড দিয়ে শিলিংয়ের (চাতাল) ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়াও অভিজ্ঞ খামারি বা ভেটেরিনারি ডাক্তার ভাইদের খামারের শীত, বর্ষা এবং গরমকালীন ব্যবস্থাপনা। বিষয়ে কোনো পরামর্শ থাকলে শেয়ার করবেন, তাহলে অনেক খামারি উপকৃত হবে।। শুভ কামনা সবার জন্য।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৫অক্টোবর২০