মাছটির গড়ন অনেকটা পুঁটির মতো। নাম পেংবা। ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম হবে। নদীর মাছ। ভারতের মণিপুরের বিভিন্ন নদী ও লোকতাল লেক ছাড়া চীনের নদ-নদী ও হ্রদে, মায়ানমারের চিন্দুইন নদীতে এই মাছের দেখা মেলে। অবশ্য নানা কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে পেংবা।
কেউ কেউ বলেন, এই মাছ স্বাদে-গন্ধে হার মানাতে পারে ইলিশকেও! বলা যায়, অনেকটা এ কারণেই উদ্বিগ্ন বোধ করছিলেন সংশ্লিষ্টরা। এক পর্যায়ে এই মাছের কৃত্রিম প্রজনন ঘটাতে সক্ষম হন উড়িষ্যার সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্রেশ ওয়াটার অ্যাকোয়াকালচার বা সিফা’র মৎস্যবিজ্ঞানীরা।
জানা যায়, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা মৎস্য দপ্তরের উদ্যোগে ৬০ হাজার পেংবা চারা সংগ্রহ করে হলদিয়ার ৭টি ভেড়িতে ছাড়া হয়েছিল গত বছর। তাতেই এসেছে বড় সাফল্য।
হলদিয়া ব্লক মৎস্য দপ্তর জানাচ্ছে, পেংবা নিয়ে তাদের পরীক্ষা সফল। এখন ৭টি ঘের মিলিয়ে ৫০ হাজার পেংবা আছে। মাছগুলির ওজন এখন গড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম। ওজন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম হলেই বিক্রি করা হয়। দক্ষিণবঙ্গে একমাত্র পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়াতেই নতুন এই মাছের চাষ হয়েছিল। পেংবা মাছের চারা দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় দুই মৎস্যচাষি অরূপ মন্ত্রী ও শরৎচন্দ্র ভৌমিককে। তাদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পেংবা চাষের সাফল্য দেখতে উপস্থিত ছিলেন সিফা’র মৎস্যবিজ্ঞানী প্রতাপচন্দ্র দাস। তার চেষ্টাতেই সফল হয়েছিল পেংবা মাছের কৃত্রিম প্রজনন। পেংবা চাষে সাফল্য সরেজমিন দেখে অভিভূত তিনি। সেদিন শতাধিক গ্রামবাসীকে পেংবা মাছ খাওয়ানো হয়।
হলদিয়ার মৎস্য চাষ ও সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুমনকুমার সাহু বলেন, সব সংশয় কাটিয়ে এই ভিন্ন পরিবেশে পেংবা দিব্যি বেঁচে গেছে। শুধু টিকে থাকাই নয়, মাছের আশানুরূপ বৃদ্ধি হয়েছে। এখন থেকে পেংবা হলদিয়া ও আশপাশের বাজারে সরবরাহ করা যাবে বলে আশা চাষিদের। সূত্র: দৈনিক আজকাল।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন