আমরা হাঁসের মাংস থেকে ভালোবাসি। আর বাড়িতে হাঁস পালনও করি দু’একটা। কিন্তু মরক লাগার ভয়ে আমরা হাঁস পালনে আগ্রহী হইনা। আবার অনেকে মনে করেন হাঁস খাবারও বেশি খায় । আসুন দেখি হাঁস পালন কেন করবেন তার অন্তত দশটি কারণ আপনাদের জানাই।
হাঁসের ডিম ও মাংসের পুষ্টিমান:
সাধারণত হাঁসের ডিম ও মাংস বেশ পুষ্টিকর ও সবার জন্য উপযোগী। মুরগির ডিমের চেয়ে হাঁসের ডিমে আমিষ, শক্তি, ক্যালসিয়াম বেশি থাকে। যেখানে মুরগির ডিমে আমিষ ১৩.৩ ভাগ থাকে সেখানে হাঁসের ডিমে ১৩.৫ ভাগ। ক্যালরি বা শক্তি হাঁসের ডিমে থাকে ১.৮১ ভাগ আর মুরগির ডিমে থাকে ১.৩৭ ভাগ।
আবহাওয়াগত কারণ:
বাংলাদেশের আবহাওয়া হাঁসের খামারের জন্য বিশেষ উপযোগী। হাঁস শীত ও গরম উভয় সহ্য করতে পারে। কঠিন আবহাওয়া ও জলবায়ুর সাথে হাঁস সহজে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। তাই আপনি চাইলে বাংলাদেশের যেকোন জায়গায় হাঁস পালন ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
পানির সহজলভ্যতা:
আমাদের দেশের মতো পানির এত সহজলভ্যতা আর কোথায় নেই। এই পানির সহজলভ্যতা কাজে লাগিয়ে শুরু করুন হাঁস পালন ব্যবসা। কেননা দেশে অনেক খাল, বিল, হাওড়, পুকুর দিঘী ও নদী রয়েছে। এই সব মুক্ত পরিবেশ হাঁস চাষ করার জন্য উপযোগী।
হাঁসের বিচারণ ক্ষমতা:
হাঁস সাধারণত খাল বা নদী থেকে নিজেদের খাবার নিজেরা সংগ্রহ করতে পারে বিধায় মুরগির চেয়ে লাভ বেশি। সকাল বেলা ছেড়ে দিলে এরা সাধারণত সন্ধ্যায় আবার ফিরে আসে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এদের বিচারণ করার ক্ষমতার জন্য খরচ কম হয়।
রোগ বালাই কম:
সঠিক সময়ে ভেকসিন দিতে পারলে হাঁসের রোগ নিয়ে আর কোন সম্যসায় পরতে হবে না। তুলনামূলকভাবে মুরগির চেয়ে হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি।
হাঁসের খাবার-দাবার:
মুক্ত অবস্থায় হাঁস পালন করলে হাঁসকে শুধু এক বেলা খাবার দিতে হয়। আর আটকা পরিবেশে হাঁস পালন করলে ৩ বেলা খাবার দিতে হবে। মুরগির খাবারের চেয়ে হাঁসের খাবারের দাম কম। তাছাড়াও হাঁসের খাবার ঘরয়ো ভাবে বানিয়ে হাঁসকে খাওয়ানো যায়।
হাঁসের চাহিদা বেশি:
যে কোন প্রকার ডিমের মধ্যে হাঁসের দিমের চাহিদা বেশি হওয়ায় দামও বেশি। হাঁসের ডিমের গুনাগুণের পাশাপাশি সাইজে বড় তাই চাহিদাও বেশি।
হাঁস ও মাছ এক সাথে চাষ করলে যেমন হাঁস সাঁতার কাটার জন্য একটি জলাশয় পাবে। অপরদিকে সাঁতার কাটার ফলে পানিতে অক্সিজেন বাড়বে যা মাছের জন্য উপকারী। সব থেকে বড় সুবিধা হাঁসের বিষ্ঠা মাছের খাবার হিসাবে কাজ করে।
জায়গা কম লাগে:
হাঁস সাধারণত একে অপরের গায়ের সাথে লেগে থাকতে পছন্দ করে। তাই অল্প জায়গায় বেশি হাঁস পালন করা যায়। তাছাড়া হাঁসের ঘর মাচা সিস্টেম করলে বেশি হাঁস রাখা যায়।
দেখাশুনা:
হাঁসের খামারের সাইজের ওপর নির্ভর করে কতজন কর্মী লাগবে। সাধারণত ৫০০ হাঁসের জন্য ১ জন লোকেই যথেষ্ট।
তাহলে প্রিয় পাঠক জানলেন তো মুরগির সাথে সাথে হাঁসও পালন করতে পারেন। আর অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে দেশের তথা পরিবারের সহায়তায় ভূমিকা রাখুন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন