বাণিজ্যিকভাবে যে কয়েক জেলায় পেঁয়াজের চাষাবাদ হয় তার মধ্যে অন্যতম রাজশাহী। তবে এবারের চিত্র আরও ভালো। রাজশাহীতে পেঁয়াজ চাষে রেকর্ড, ভালো দামের প্রত্যাশা এখন চাষিদের।
চলতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভাল দাম, অনুকুল আবহাওয়া, সরকারী সহায়তা ও কৃষি বিভাগের পরামর্শে রাজশাহী জেলায় এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে।
কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। মসলা জাতীয় ফসল পেঁয়াজের ঘাটতি মেটাতে রাজশাহী অনেক বড় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি তথ্য সার্ভিস, রাজশাহী সূত্র জানায়, রাজশাহীতে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল ১৪৯০২ হেঃ জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ২লাখ ২২ হাজার ৪১২ মে.টন। সেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরে পেঁয়াজের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৬০০ হেঃ জমি এর বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১৬ হাজার ৭৯১ হেঃ জমিতে যা গত বছরের তুলনায় ১ হাজার ৮৮৯ হেক্টর বেশি।
ইতোমধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ সংগ্রহ শেষ হয়েছে এবং চারা পেঁয়াজের কর্তন শুরু করেছেন পেঁয়াজ চাষিরা। এই পেঁয়াজ রাজশাহীর হাটগুলোতে উঠায় বাজারে আমদানি বেড়ে কমেছে পেঁয়াজের অস্বাভাবিক দাম। এছাড়া মাঠেও বর্তমানে পেঁয়াজের সার্বিক অবস্থা ভাল। চলতি বছর বিগত বছরের তুলনায় অধিক ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দূর্গাপুর উপজেলার শানপুকুরিয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষী সাহেব আলী জানান, তাহেরপুরী আগাম জাতের পেঁয়াজ বাজারে উঠায় পেঁয়াজের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসছে। অনুকুল আবহাওয়া ও কৃষি বিভাগের নিবিড় পরামর্শের জন্য কৃষকের বিঘাপ্রতি উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন তারা।
পুঠিয়া উপজেলার কাঁঠালবাড়িয়ার কৃষক আবুল হোসেন জানান, দাম ভালো পেলে খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৫০ হাজার টাকা লাভ হতে পারে। রাজশাহীর বানেশ^রের কৃষক আব্দুল লতিফ জানান, তিনি এবছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে বীজ শোধন করে পেঁয়াজ চাষ করেন। এবার তিনি বিগত বছরের চেয়ে পেঁয়াজের উৎপাদন বেশি হবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক, কৃষিবিদ মো: শামছুল হক বলেন, রাজশাহীতে এবার পেঁয়াজের ফলন ভাল হয়েছে। পরিপক্ক পেঁয়াজ উঠলে সে ক্ষেত্রে অনেক বেশি উৎপাদন হবে। তিনি আরো বলেন, পেঁয়াজের অবস্থা ভালো আছে। আগাম জাতের পেঁয়াজ পুরোদমে ওঠা শুরু হয়েছে হাটগুলোতে।
তিনি জানান, এখন আর বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে খেতে হবে না আমাদের। নির্বিঘেœ পেঁয়াজ উত্তোলন করা গেলে রাজশাহী জেলায় প্রায় ২.৫ লক্ষ মে.টন পেঁয়াজ উৎপাদন সম্ভব হবে যা জেলার মোট চাহিদার প্রায় ৫ গুণ। জেলার প্রায় ৩০ লক্ষ জনগণের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত পেঁয়াজ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ লোকের চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।
রাজশাহীতে পেঁয়াজ চাষে রেকর্ড, ভালো দামের প্রত্যাশা শিরোনামে সংবাদটির তথ্য নিশ্চিত করেছেন মোঃ আবদুল্লাহ-হিল-কাফি, আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, আঞ্চলিক অফিস, রাজশাহী।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০৩এপ্রিল২০