রাজশাহী অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুর হাটে ভিড় জমে উঠেছে। ঈদ উপলক্ষে সপ্তাহের ৭ দিনই বসছে রাজশাহী সিটিহাট। দফায় দফায় লকডাউনে বাইরের ক্রেতা না আসায় অবিক্রীত দেখা গেছে বড় গরু। ফলে বড় গরু নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা।
সাপ্তাহিক হাটের দিন গতকাল রোববার (১৮ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড় গরুর ক্রেতা নাই। চট্টগ্রাম, ঢাকা, বরিশাল, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা আসেন নি। যে দু-একজন এসেছেন তারা কিনছেন অল্প পরিমাণে।
আশেপাশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর জেলা থেকে গরু-ছাগল হাটে আনা হয়েছে। রয়েছে ছোট, বড় মাঝারি সাইজের গরু। খামার ছাড়াও ব্যক্তিগত পর্যায়ে যেসব গরু পালন করা হয়েছে সেসব পশু বিক্রির জন্য এনেছেন অনেকে। তবে, চোখ ধাঁধাঁনো বড় সাইজের গরুর দিকে কারো নজর নেই। ক্রেতাদের মূল চাহিদা ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু।
এ হাটে আসা জলিল জোয়ার্দার জানান, আনুমানিক সাড়ে ১৩ মণ ওজনের এক ষাঁড় গরু নিয়ে এসেছেন। দাম হাঁকছেন ২ লাখ ৭০ হাজার। ২ লাখ ১০ হাজার দাম বলছেন ক্রেতারা। এখন পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেননি তিনি।
তিনি জানান, হাটে বড় গরুর ক্রেতা নেই। যে দু-একজন এসেছেন তারা অনেক কম দাম বলে চলে যাচ্ছেন। স্থানীয়রা এসব বড়বড় গরু কোরবানি দিয়ে শেষ হবে না। এসব বড় গরুর মূল ক্রেতা বাইরের। স্বাভাবিক সময়ে এই গরু তিন লাখে বিক্রি হতো। এখন দাম বলার লোক নাই।
ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন জানান, হাটের পরিস্থিতি ভালো না। বড় গরুর পাইকার আসবে বলে ৫ টা গরু কিনেছি। গরু কিনে বিপাকে পড়েছি। লাভের কথা তো দূরে থাক, ৫ টা গরুতে এখন ৭০ হাজার টাকা কম বলছে।
বানেশ্বর থেকে গরু কিনতে এসেছেন মো: রনি। পছন্দের গরু দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এই ক্রেতা জানান, আনুমানিক ৫ মণ ওজনের ষাঁড় গরু দাম চাওয়া হচ্ছে আড়াই লাখ। কিন্তু ১ লাখ ৫ থেকে ১০ হাজারের মধ্যে হলে ভালো হয়। এজন্য দাম একটু বেশি বলে মনে হচ্ছে। আজ কিনতে না পারলেও আরো দুদিন আছে কিনে ফেলবো।
এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সিটি হাটের ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে জানান, আজ রোববার হাটে প্রচুর গরু উঠেছিল। অনেক গরু ফেরৎ গেছে, বিক্রি হয়নি। ঈদের শেষ হাট হলেও তেমন বিক্রি হয়নি। আজ তিন হাজারের মতো বিক্রি হতে পারে গরু। তবে, মহিষের একটা তথ্য পেয়েছি ২৮০ টা বিক্রি হয়েছে। সব তথ্য এখোনো হাত পাইনি। ঈদের আগ পর্যন্ত প্রতিদিন হাট বসছে। গতবারের মতো এবার বিক্রি নাই।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো: ইসমাইল হক বলেন, রাজশাহী সিটিহাট এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় পশুর হাট। আজ রোববার হাট বসেছে। জেলায় এ পর্যন্ত কি পরিমাণ পশু বিক্রি হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না; ঈদের পর তথ্য দেওয়া যাবে। অনলাইনে আজ পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৮৩ টি পশু বিক্রি হয়েছে। যার দাম ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দফতরের পরিচালক উত্তম কুমার দাস জানান, রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় মোট কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে ২৪ লাখ ৮৮ হাজার ১৬০টি। ২৫ হাজার ২৬১ মহিষ, ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৩২ ছাগল এবং ১৪ লাখ ৪০ ভেড়া। এসব পশুর ২০ শতাংশ অনলাইনে আর বাঁকি ৮০ শতাংশ গরু প্রচলিত হাটে বিক্রি হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ১৯ জুলাই ২০২১