লিচুর মাইট রোগ ও প্রতিকার

2838

88276947_2576342015828044_3414623421227597824_n
লিচুর মাইট

লিচু বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ফল। উত্তরবঙ্গে উন্নত জাত ও সুস্বাদু লিচুর জন্যে পরিচিত। যদিও আমাদের আবহাওয়া লিচু চাষের জন্যে উপযুক্ত, তথাপি এই দেশে লিচু চাষ এখনো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি তেমন।
লিচুর তেমন কোনো মারাত্মক রোগ দেখা যায় না। তবে আর্দ্র ও কুয়াশাযুক্ত আবহাওয়ায় পুষ্পমঞ্জুরি পাউডারি মিলিডিউ ও অ্যানথ্রাকনোজ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তা ছাড়া অনেক সময় ছত্রাকজনিত রোগের কারণে ফল পচে যায়।

মাইট লিচুর অন্যতম শত্রু পোকা। মাকড়সা জাতীয় এই পোকা আকারে খুব ছোট হয়।

ক্ষতির স্থান ও লক্ষণ
মাকড় জাতীয় এ পোকা লিচু গাছের নতুন পাতায় আক্রমণ করে এবং পাতার রস চুষে খেয়ে পাতা কুঁকড়ে ফেলে। আক্রান্ত পাতায় গল তৈরি হয়ে থাকে। আক্রান্ত পাতায় মখমলের মত লালচে বাদামী দাগের সৃষ্টি হয়ে থাকে।পুষ্প মঞ্জুরি, ফুলের কুড়ি এবং ছোট ফলও এরা ক্ষতি করে থাকে। অতি মাত্রায় লিচু মাইটের আক্রমণ হলে ব্যাপকভাবে ফলন কমে যায়। এদের আক্রমণ প্রায় সারা বছরই থাকে। নভেম্বর- ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রমণ অপেক্ষাকৃত কম থাকে। এপ্রিল – মে মাসে এদের সংখ্যা বেশি থাকে। পূর্ণ বয়স্ক মাকড় আক্রান্ত পাতায় ফেব্রুয়ারি – মার্চ এবং জুন- জুলাই মাসে দেখা যায়।

প্রাকৃতিক শত্রু দ্বারা বালাই দমন
বাংলাদেশ এ তিন ধরণের মাকড়সা (Tetranychus spp) পাওয়া গেছে যা দ্বারা প্রাকৃতিকভাবে মাইটকে দমন করা সক্ষম। প্রকৃতিতে অনেক বল্লা রয়েছে যারা মাজরা পোকার দমনে সহায়তা করে থাকে।

বালাইনাশক দ্বারা পোকা দমন
এপ্রিল – মে মাসে লিচুর মাইটের (মাকড়) আক্রমণ পাওয়া গেলে কেলথেন ৪০ এমএফ অথবা নিউরণ ৫০০ ইসি অথবা টারকিউ ৫০ ইসি অথবা ওয়েটেবুল সালফার ২ মিলি প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ফুট পাম্প অথবা ভলিউম পাওয়ার স্প্রেয়ার দিয়ে ভালভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে।
কান্ড ও ফলের মাজরা পোকা দমনের পূর্বে জরিপ করে দেখতে হবে কি পরিমাণ লিচু পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। পোকার আক্রান্ত ব্যাতীত ফল রক্ষার জন্য বালাইনাশক প্রয়োগ যে খরচ হবে, তা যদি ফল বিক্রি করার পর বেশি মুল্য পাওয়া না যায় সে ক্ষেত্রে বালাইনাশক স্প্রে না করাই ভাল।সাইপারমেথ্রিন(রিপকর্ড/সিমবুশ/বাসাথ্রিন/এরিভো/অন্যান্য) ১০ ইসি ১ এমএল প্রতি লিটার পানির সাথে মিশিয়ে ফল পাকার ১৫/২০ দিন পূর্বে লিচু ফলের মাজরা পোকা দমনের জন্য প্রয়োগ করা যেতে পারে।

করনীয়
ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডাল পালা ছাটাই করে পরিস্কার করে রাখুন।
পরিস্কার করার পর একটি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করুন ।
নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করুন।

ফার্মসএন্ডফার্মার/০৯মার্চ২০