লিচুর ফল ফেঁটে যাওয়া
শুরু হয়েছে লিচুর মৌসুম। এসময়টি লিচুর ফল ফেটে যাওয়া (Fruit cracking) রোগটি সম্পর্কে লিচু চাষীদের জন্য বাড়তি সচেতনতা অবলম্বন বিশেষ প্রয়োজন। শারীরবৃত্তীয় কারণে লিচুর ফল ফেটে যাওয়া রোগটি হয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালে পর্যায়ক্রমে শুষ্ক আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত হলে ফল ফেটে যায়।এগ্রিলাইফ২৪ ডটকমের সম্মানিত পাঠকদের জন্য আজ থাকছে এ রোগের বিস্তারিত।
রোগের বিস্তার:
আগাম জাতে এ সমস্যা বেশী হয়। দীর্ঘ খরার পর হঠাৎ বৃষ্টি, শুষ্ক ও গরম হাওয়ার কারণে এ রোগ বেশী হয়। পলি বা বেলে দোঁআশ মাটির পানি ধারণ ক্ষমতা কম। এ ধরণের মাটিতে স্থাপিত লিচু বাগানের ফল ফেটে যাওয়ার সমস্যা বেশী দেখা যেতে পারে। মাটিতে বোরণ ও ক্যালসিয়ামের অভাব থাকলে রোগের তীব্রতা বাড়ে। বাংলাদেশে আবাদকৃৃত জাতগুলোর মধ্যে বোম্বাইতে আক্রমণ বেশী দেখা যায়।
রোগের লক্ষণ:
দীর্ঘ সময় খরা চলতে থাকলে ফলের বাহিরের খোসা শক্ত হয়ে যায়।
এরপর হঠাৎ বৃষ্টি হলে ফলের বৃদ্ধি শুরু হয় অর্থাৎ লিচুর পাল্প দ্রুত বৃদ্ধি পায়
বাহিরের খোসা শক্ত থাকায় ফলের ভিতরের অংশ (পাল্প)-এর সাথে সুষমভাবে দ্রুত বাড়তে না পারায় খোসা ফেটে যায়
ফল ফেটে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি খুব দ্রুত সম্পন্ন হয়
উক্ত ফাটা স্থানে রোগ জীবানুর আক্রমণ ঘটতে পারে
ফলে গোটা ফল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়
ফল ফেটে গেলে তার বাজার মূল্য কমে যায়।
রোগের প্রতিকার:
মাটিতে জৈব সার সহ সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে।
খরা মৌসুমে ফল ধারণের পর থেকেই নিয়মিত সেচ প্রদান করতে হবে
সেচ প্রদানের পর গাছের গোড়ায় কঢ়ুরিপানা বা খড় দ্বারা আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে হবে
প্রতি বছর প্রতি গাছের গোড়ায় ক্যালসিয়াম সার (ডলোচুন – ১৫০ গ্রাম) প্রয়োগ করতে হবে
ফলসহ গাছে পানি স্প্রে করতে হবে
ফল বৃদ্ধির সময় জিংক সালফেট প্রতি লিটার পানিতে ১০ গ্রাম হারে মিশিয়ে পর পর ৩ সপ্তাহ গাছে স্প্রে করলে ফল ফাটা ও ফল ঝরা বন্ধ হয় এবং ফলের আকৃতিও বড় হয়।
গুটি বাধার পর পরই প্লানোফিক্স বা মিরাকুলান প্রতি ৪.৫ লিটার পানিতে ২ মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
বোরিক এসিড প্রতি লিটার পানিতে ৩ গ্রাম হারে মিশিয়ে পর পর ৩ সপ্তাহ গাছে স্প্রে করলে ফল ফাটা বন্ধ হয় এবং ফলের আকৃতিও বড় হয়।
ফার্মসএন্ডফার্মার/০২ এপ্রিল২০