লেবুর কিছু রোগ ও তার প্রতিকার

4120

লেবু

বিশ্বে সাইট্রাস (লেবুজাতীয় ফল) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফল। উৎপাদনের দিক থেকে পৃথিবীর ফলগুলোর মধ্যে এর স্থান দ্বিতীয় কিন্তু আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দিক থেকে এ ফলের স্থান প্রথম (স্যামসন, ১৯৮৬)। বাংলাদেশের আবহাওয়া লেবুজাতীয় ফল (বিশেষ করে এলাচিলেবু, কাগজিলেবু, জাম্বুরা বেশি ভালো হয়) উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। এ দেশে লেবুজাতীয় ফলের বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

এ দেশের লেবুজাতীয় ফলচাষিরা প্রতি বছর রোগবালাই ও পোকামাকড় দ্বারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কি রোগ ও পোকা বেশি আক্রমণ করে উহার লক্ষণ ও প্রতিকার দেখে নিই:

রোগসমূহ:

  • ডাই-ব্যাক (Dic-back)
  • স্ক্যাব (Scab)

ডাই-ব্যাক (Dic-back):

লেবু জাতীয় ফসলের এটা একটি মারাত্মক রোগ। এ রোগের কারণে প্রতি বছর লেবুর ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। এ রোগ কোলিট্রোটিক্যাম গোলিওসপোরডিস (Colletotrichum gloesporiodes) নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে।

লক্ষণ:

  • পাতার শিরাগুলো হলুদ হয়ে যায়।
  • সম্পূর্ণ পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ে।
  • শাখার অগ্রভাগ এবং ছোট ছোট প্রশাখাগুলো পুড়িয়ে যাওয়ার মতো দেখা যায় ও নিচের দিকে ঝুলতে থাকে।
  • আক্রান্ত গাছের আকার ছোট দেখা যায়।
  • কিছু দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ গাছ মরে যায়।

প্রতিকার:

  • উন্নত পরিচর্যা পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
  • প্রয়োজনীয় পরিমাণ পটাশ ও দস্তা সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • ফল সংগ্রহের পর বাগানের আবর্জনা এবং যদি আক্রান্ত অংশ থাকে  পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  • ডাইথেন-এম-৪৫ পানিতে ০.৩ % হারে মিশে ১০-১২ দিন পর পর ৩-৪ বার স্প্রে করতে হবে।

স্ক্যাব (Scab):

লেবু গাছের সর্বত্রে এ রোগ দেখা যায়। এ রোগের কারণে ফলের উপরিভাগ অত্যন্ত বিশ্রী হয়ে যায় এবং বাজারমূল্য কমে যায়। ইলন্সিনও ফাউসেটি (Elsinoe fawcetti) নামক এক প্রকার ছত্রাক দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।

স্ক্যাব

লক্ষণ:

  • পাতা, কচি ডাল ও ফলের ওপর পানি ভেজা দাগ দেখা যায়।
  • প্রয়োজনীয় পরিমাণ পটাশ ও দস্তা সার প্রয়োগ করতে হবে।
  • ফল সংগ্রহের পর বাগানের আবর্জনা এবং যদি আক্রান্ত অংশ থাকে  পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
  • অনেক ছোট দাগ একত্র হয়ে খসখসে কর্কের মতো হয়ে যায় ও ফলের বাজারমূল্য কমে যায়।

প্রতিকার:

  • রোগাক্রান্ত পাতা, ডালপালা, ফল সংগ্রহ করে পুড়ে ফেলতে হবে।
  • জিংক সালফেট ও ছাই বর্ষার আগে গাছের গোড়ার মাটি আলগা করে প্রয়োগ করতে হবে।
  • বোর্দোমিক্সার এবং ফানজিসাইট (যেমন- কুপরাভিট ০.৩ % হারে ২-৩ বার প্রয়োগ করতে হবে) স্প্রে করতে হবে।