স্থানীয় পোল্ট্রি বিশেষজ্ঞ দ্বারা প্রদত্ত ভ্যাকসিন শিডিউলটি অনুসরণ করুন কোন প্রকার গাফিলতি না করে, দিন ও বয়স ধরে দক্ষ কর্মীর মাধ্যমে সঠিক পদ্ধতিতে ভ্যাকসিন দিতে থাকুন, অদক্ষ লোক ভ্যাকসিন দিলে কিছু কিছু বাচ্চায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ বাদ যেতে পারে ফলে ঐ সকল বাচ্চা পরবর্তীকালে ভ্যাকসিন দেওয়া সত্ত্বেও ফ্লকের অন্য মুরগীতে রোগ ছড়াবে। ভ্যাকসিন সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষন করুন ফ্রিজে সবসময় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত রাখুন অন্যথায় ভ্যাকসিনের গুনাগুন নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং খামারকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। ব্যবহার করা ভ্যাকসিনের খালি বোতল মাটিতে পুঁতে ফেলতে কোন ভাবেই ভুল করবেন না কারন এই সকল খালি বোতলই এক সময় রোগ ছড়ানোর উৎস হয়ে দাঁড়ায়। ৫-৬ দিন বয়সের মধ্যেই কক্সিভ্যাকসিন দিয়ে দিবেন। বেশি দেরি করলে ভ্যাকসিনে কাজ নাও করতে পারে। কক্সিভ্যাকসিন দেওয়ার পরও ১০-১২ দিন বয়সে বাচ্চায় কক্সিডিওসিসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে, ভয় পাওয়ার কোন কারন নেই এটা আসলে ভ্যাকসিন কার্যকারী হয়েছে বলে প্রমান করে, যদি এই সময়ে রোগের মাত্রা একটু বেশী দেখা যায় তাহলে পানিতে দ্রবণীয় কক্সিডিওস্ট্যাট যেমন এম্প্রোলিয়াম সাথে ভিটামিন কে ব্যবহার করতে হবে, কোনভাবেই কক্সিসাইডাল জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা যাবে না, করলে কক্সিভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে এবং এ সময়ে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ব্যবহার থেকে থেকে বিরত থাকবেন। ৭-৮ দিন বয়সের মধ্যেই প্রথম বারের ডিবেকিং (ঠোঁট কাটা) কাটা শেষ করতে হবে দেরি হলে ঠোঁট শক্ত হয়ে যায় এবং ডিবেকিং কালে বাচ্চার ঠোঁট ফেটে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে। প্রথম বারের ঠোঁট কাটায় মূলত বাচ্চার ঠোঁটের অগ্রভাগে ডিবেকিং মেশিনের গরম ব্লেডের সেঁকা দিয়ে একটু ভোঁতা করে দিতে হয়। ব্লেডের সাথে সেঁকা দেওয়ার সময় খুব সতর্ক থাকতে হবে যেন জিহ্বায় গরম সেঁকা না লাগে। লাগলে বাচ্চার মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে। ঠোঁট কাটা কালীন সময়ে পানিতে ভিটামিন কে দিতে হবে। তাহলে ঠোঁট কাটার সময় রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। প্রথম ১৪ দিনে বাচ্চার উপর অনেক ধকল যায় সেজন্য পানিতে দরকারী ভিটামিন যেমন মাল্টিভিটামিন, বি কমপ্লেক্স, সি ও এডি৩ই, ই, ক্যালসিয়াম ও ইলেক্ট্রলাইট প্রয়োগ করতে হবে। অভিজ্ঞতায় বলে এই ১৪ দিনে যে খামারী যত বেশি তার লেয়ার মুরগীর বাচ্চার প্রতি যত্নবান হবেন তার বাচ্চায় তত কম মৃত্যুহার থাকবে এবং আগামীদিনে এই সকল বাচ্চা তার জন্য অনেক বেশী লাভ বয়ে আনবে। ভালভাবে শুরু করা মানে অর্ধেক কাজ শেষ হয়ে যাওয়া, লেয়ার ফ্লাকের জীবন চক্রের শুরুতে বাচ্চাকে তার প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা প্রদান করলে সেই ফ্লাকের মুরগীতে ভাল ইউনিফরমমিটি থাকে, সময়মত প্রোডাকশনে আসে, পিক প্রোডাকশন অনেক দিন ধরে থাকে। প্রতি মুরগীতে বেশী হেন হাউজ প্রোডাকশন পাওয়া যায় ঔষধপত্র কম লাগে ও মৃত্যুহার কম থাকে। সহজ কথায় বললে এই সময়টা ইন্টেন্সিভ কেয়ার টাইম, গাফিলতি হলে পরিনামে অগুনিত লোকসান অপেক্ষা করবে আপনাকে আলিঙ্গন করার জন্য। “অঞ্জন মজুমদার”