লোকসানের মুখে লিচু চাষিরা

606

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার মঙলবাড়িয়া গ্রামে মৌসুমের শুরুতেই লিচু বেচাকেনা চললেও চাষিদের মুখে নেই হাসি। কারণ মুকুলের সময় ঝড় আর শিলাবৃষ্টি হওয়ায় এবার গাছ থেকে ব্যাপকভাবে ঝরে পড়ছে অপরিপক্ক লিচুর গুঁটি। এ কারণে ঘটছে ফলন বিপর্যয়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে লিচুর ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে লিচুর দাম ভালো না পাওয়ায় উৎপাদন খরচ উঠবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। ফলে মঙলবাড়িয়া গ্রামের প্রায় ৫০০০ লিচু চাষি লোকসানের মুখে পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই শতাধিক বছর ধরে লিচু চাষ করে আসছে পাকুন্দিয়া পৌর এলাকার এই গ্রামের মানুষজন। বর্তমানে ওই গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৫০০০ পরিবার সুস্বাদু লিচুর উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করছে। পাকুন্দিয়া পৌরসদর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্ব দিকে মঙলবাড়িয়া গ্রাম। এ পথ ধরে একটু এগুলেই চোখে পড়বে মঙলবাড়িয়া গ্রামের লিচু বাগানগুলো। এ গ্রামে প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় গাছে গাছে পাকা লিচুর ঝলকানি। প্রতিকূল অবস্থা আর অপর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার মধ্যেও কঠোর পরিশ্রম করে এখানকার মানুষ তাদের উৎপাদিত লিচু বাজারজাত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বাগান মালিকদের সঙ্গে আলাপকালে লিচু চাষের সম্ভাবনা ও সমস্যার কথা জানা যায়, মঙলবাড়িয়া গ্রামকে ঘিরে পার্শ্ববর্তী কুমারপুর, শ্রীরামদী, পাকুন্দিয়া সদর, নিশ্চিন্তপুর ও উত্তরপাড়া গ্রামেও গড়ে উঠেছে ছোট ছোট লিচু বাগান। উৎপাদিত এসব লিচু দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ ও বিক্রির জন্য ব্যস্ত লিচু চাষিরা।

তারা জানান, প্রতি বছরই যথাসময়ে লিচু গাছে পরিচর্যা দিয়ে ভালো ফলনের উপযোগী করে তোলা হয়। কিন্তু এ বছর মুকুলের সময় ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হওয়ায় লিচুর অপরিপক্ক গুটি দিনরাত টপটপ করে ঝরে পড়ছে। তাছাড়া এবার লিচু তেমন পোক্ত হয়নি।

মঙলবাড়িয়া গ্রামের লিচু চাষি আবু মিয়া বলেন, গত বছর যে কয়টি লিচু গাছ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলাম। এ বছর সেই গাছগুলো মাত্র দুই হাজার টাকায় বিক্রয় করেছি।

একই গ্রামের লিচু চাষি নাসির উদ্দিন বলেন, গত বছরে যে সকল গাছে প্রচুর লিচু ছিল। এবছর সেই সকল গাছগুলোতে কোনো লিচুই নেই।

পাকুন্দিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.সাইফুল হাসান আলামিন জানান, মঙলবাড়িয়া গ্রামের মাটি লিচু চাষের উপযোগী। এখানে উৎপাদিত লিচু অত্যন্ত সুস্বাদু। কৃষি অধিদপ্তর থেকে লিচু উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাষিদের যাবতীয় পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তবে এবছর শিলাবৃষ্টির কারণে চাষিরা অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

সূত্র: কালের কণ্ঠ

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৯মে২০