নিজের চাষের জমি নেই। জমি বলতে বসত ভিটে মাত্র। বাধ্য হয়ে অন্যের জমিতে কৃষি শ্রমিকের কাজ করতে হয়। তিন সদস্যের পরিবারে ভরণপোষণ চালিয়ে একমাত্র কন্যার লেখাপড়া করানো কঠিন ছিলো। তবুও দমে যাননি প্রান্তিক কৃষক শেখ আছাদুজ্জামান (৫০)। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিল যেভাবেই হক ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে হবে।
জেলার লোহাগড়া উপজেলার শিংগা গ্রামের মৃত দলিলউদ্দিন শেখের ছেলে আছাদুজ্জামান। পরবর্তীতে তিনি এলাকার কৃষি জমি অল্প টাকায় বন্ধক নেন। সেই জমিতে কলা চাষ করে সুফলও পান।
জানা গেছে, ১৩৪ শতক কৃষি জমি ১৩ হাজার ৪০০ টাকায় এক বছরের জন্য বন্ধক নিয়ে গত বছর কলার আবাদ শুরু করেন। যশোর চৌগাছার কাদবিলা দরগাতলা থেকে ১ হাজারটি কলার চারা কিনে এনে সেই জমিতে রোপণ করেন। নিবিড় পরিচর্যায় চারা গাছগুলো বড় হতে থাকে। ১১ মাস যেতে না যেতেই প্রতিটি গাছে গাছে কলার কাঁধি ঝুলতে দেখা যায়। এখন কলা পাকতেও শুরু করেছে। গড়ে প্রতি কলার কাদি বর্তমান বাজার মূল্য ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা। সে মোতাবেক আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সমস্ত খরচ বাদে এ বছর লাভ হবে দুই লাখ টাকা। এমনটাই জানান কৃষক আছাদুজ্জামান।
কলা চাষি আছাদুজ্জামান বলেন, নিজের চাষ যোগ্য জমি না থাকায় পরের জমিতে কামলা খাটতে (শ্রম দিতে) হয়েছে। সফলতার মুখ দেখি নাই। গতবছর এই সময় শতক প্রতি ১০০ টাকা করে ১৩৪ শতক জমি লিজ (বন্দক) নিয়ে কলার আবাদ শুরু করি। ফলন পাওয়া পর্যন্ত গাছ প্রতি খরচ হয়েছে ১০০ টাকা। সে মতে প্রতিটি গাছ থেকে বর্তমান বাজার হিসেবে আয় হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর কলা থেকে আয় হবে দুই লক্ষাধিক টাকা।
কৃষক আছাদুজ্জামানের স্ত্রী বলেন, খেয়ে না খেতে আগে তাদের দিন কাটতো। স্বামীর পাশাপাশি তিনিও কালা চাষে সহযোগিতা করেছেন। এখন প্রতিটা কলা গাছে কলা ঝুলছে। ইতো মধ্যে বেশকিছু কলা ভাল দামে বিক্রি করেছেন। গাছে যে কলা আছে সেই কলা ভালোভাবে বিক্রি করতে পারলে তাদের সংসারে সচ্ছলতা আসবে।
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমিরন বিশ্বাস বলেন, কলা চাষের জন্য এ উপজেলার মাটি খুবই উপযোগি তাই কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। বিষমুক্ত ভালো জাতের কলা চাষে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।সূত্র: বাসস
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/এম