শীতকালে ব্রুডিং করার পর বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণ ও করণীয় কি তা অনেকেই জানেন না। শীতকালে মুরগি পালনকারীরা বাচ্চা ব্রুডিং করে থাকেন। শীতের সময়ে বাচ্চা ব্রুডিং করার পর পর অনেক সময় বাচ্চা মারা যায়। এতে খামারিদের লোকসান হয়ে থাকে। আজকের এ লেখায় আমরা জেনে নিব শীতকালে ব্রুডিং করার পর বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণ ও করণীয় সম্পর্কে-
শীতকালে ব্রুডিং করার পর বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণ ও করণীয়ঃ
১। একসাথে অনেকগুলো বাচ্চা ব্রুডিং করলে বা বাচ্চার ঘনত্ব বেশী হয়ে গেলে।
প্রতিকারঃ
শীতের সময় ব্রুডার প্রতি ২৫০-৩০০ টা বাচ্চা দিয়ে ব্রুডিং করতে হবে। যত কম বাচ্চা দিয়ে ব্রুডিং করবেন তত মর্টালিটি হ্রাস পাবে।
২। লিটারের পুরুত্ব কম হলে ফ্লোর থেকে ঠান্ডা লেগে বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। এসময় উপর থেকে যতই তাপ দেন না কেন নীচ/ফ্লোর থেকে ঠান্ডা লাগলে বাচ্চার মর্টালিটি বন্ধ হবে না।
প্রতিকারঃ ফ্লোর থেকে যেন ঠান্ডা না লাগে সেজন্য লিটারের পুরুত্ব ৩-৪ ইঞ্চি করে দিতে হবে।
৩। ব্রুডিং এ সঠিক তাপমাত্রা না দেয়া হলে।
প্রতিকারঃ বাচ্চা প্রতি ২ ওয়াট করে তাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অর্থাৎ ৩০০ বাচ্চার জন্য ৬০০ ওয়াট তাপের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৪। আর্লি চিকস্ মর্টালিটির অন্যতম একটি কারন হলো হাডলিং। সাধারনত বাচ্চাগুলো ঠান্ডা অনুভব করলে এবং যথেষ্ট ফ্লোর স্পেস না পেলে একত্রে জড়ো হতে থাকে এবং একটার উপর আরেকটি উঠে। এর ফলে অনেক বাচ্চা চাপা পরে মারা যায়।
প্রতিকারঃ প্রয়োজন মতমত তাপমাত্রা ও ফ্লোর স্পেস প্রদান করে বাচ্চার গাদাগাদি করার প্রবনতা রোধ করা যায়।
৬। শীতকালে ব্রুডারে পর্যাপ্ত জায়গা/ফ্লোরস্পেস না দিলে।
প্রতিকারঃ শীতকালে ২৫০-৩০০ বাচ্চার জন্য ৭-৮ ফুট ব্যাসের ব্রুডার বানিয়ে ব্রুডিং করতে হবে।
৭। কোল্ড শকের কারনে অনেক ক্ষেত্রে আর্লি চিকস্ মর্টালিটি হতে পারে। সাধারনত অধিক সংখ্যায় বাচ্চা ব্রুডিং করলে অনেক সময় পানি পান করতে গিয়ে বাচ্চা পানির পাত্রে পড়ে যায় এবং তীব্র শীতে মারা যায়। তাছাড়া ঠান্ডা পানি প্রদান করলে ও লিটার ভিজে গেলে বাচ্চা ঠান্ডা পেয়ে কোল্ড শকে মারা যেতে পারে।
প্রতিকারঃ বাচ্চা যেন পানির পাত্র পড়ে না যায় সেদিকে সতর্ক হতে হবে। সম্ভব হলে কুসুম গরম পানি বাচ্চাকে দেয়া যেতে পারে। তাছাড়া অল্প করে (২৫০-৩০০) বাচ্চা ব্রুডিং করতে হবে।
৮। ব্রুডার পর্দা দিয়ে ঢেকে না দিলে তাপ ব্রুডার থেকে বেরিয়ে গিয়ে তাপের অপচয় ঘটায় এবং ঠান্ডা বাতাস ব্রুডারের ভিতর প্রবেশ করার সুযোগ সৃষ্টি করে। ফলে ব্রুডারের তাপমাত্রা কমে গিয়ে মর্টালিটি ঘটে।
প্রতিকারঃ ব্রুডারের চারপাশ ও উপরে কাপড়/সংবাদপত্র দিয়ে ঢেকে তাপ সংরক্ষন করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু অংশ ফাঁকা রেখে অ্যামোনিয়া ও কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বের হয়ে যাবার ও বিশুদ্ধ বাতাস ব্রুডারের ভিতর প্রবেশের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৯। পর্যাপ্ত খাদ্য ও পানির পাত্র না দেয়া হলে বাচ্চা পরিমান মত খাদ্য ও পানি গ্রহন করতে পারে না। ফলে এনার্জি লস ও ডিহাইড্রেশনের কারনে বাচ্চা মারা যেতে পারে।
প্রতিকারঃ
৫০ টা বাচ্চার জন্য ১ টা ট্রে ফিডার ও ১ টা পানির পাত্র দিতে হবে।
ফার্মসএন্ডফার্মার/ ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২
