সবজির চাহিদা মেটাতে সারাদেশের সাথে পাল্লা দিয়ে গত কয়েক বছরে খাগড়াছড়িতেও বেড়েছে মুখী কচুর চাষ। এটি গুড়াকচু, কচু, ছড়া কচু, দুলি কচু, বিন্নি কচু প্রভৃতি নামেও পরিচিত। মুখীর ছড়া বীজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মুখী কচুর গাছ হলদে হয়ে শুকিয়ে গেলে এ কচু তুলতে হয়।
খাগড়াছড়ির সব উপজেলায় মুখী কচুর চাষ হলেও সবচেয়ে বেশি চাষ হয় মাটিরাঙ্গা, গুইমারা, মানিকছড়ি ও রামগড়ে। সরেজমিনে জানা যায়, ছোট-বড় পাহাড়ের ঢালে এ কচুর চাষ করা হয়। যতদূর চোখ যায় দেখা মেলে, সবুজ কচু গাছে বিস্তীর্ণ উঁচু-নিচু পাহাড়।
ধান ও অন্যান্য সবজির পাশাপাশি খাগড়াছড়ির কৃষকরা পাহাড়ের ঢালে মুখী কচু চাষ করছেন। মুখী কচু চাষে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরেছে কৃষক পরিবারে। মাটিরাঙ্গার দুর্গম তবলছড়ির কৃষক মো. শিশু মিয়া ও মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছরে মুখী কচু চাষে বদলে গেছে এলাকার অর্থনীতি। এ সবজি লাভজনক হওয়ায় চাষের পরিধি বাড়ছে।
কচু চাষি মো. আব্দুল কুদ্দুছ জানান, উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় কচু চাষে লাভের মুখ দেখছেন স্থানীয় চাষিরা। চৈত্র মাসের শুরুতে আগাছা পরিষ্কার করে মাটি কুপিয়ে চাষযোগ্য করা হয়। এপ্রিলের মাঝামাঝি বৃষ্টি হলে মুখী কচুর বীজ বপন করা হয়। চারা গজানোর পর আগাছা পরিষ্কার, কেল বা লাইন করা ও প্রয়োজনমতো কয়েকবার সার দিতে হয়। সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে উত্তোলন ও বিক্রি শুরু হয়।
ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান ও মো. নুরুল আলম জানান, মুখী কচু পাহাড়ের চাহিদা মিটিয়ে জায়গা করে নিয়েছে নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বড় বড় পাইকারি বাজারে। মানিকছড়ির হাতিমুরা, গচ্ছাবিল, রামগড়ের নাকাপা, মাটিরাঙ্গার তবলছড়ি ও তাইন্দংয়ে এর আড়ৎ রয়েছে। এখানে দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় তারা লাভের মুখ দেখছেন।
কৃষি কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বলেন, ‘প্রতি হেক্টর জমিতে উৎপাদনের খরচের দ্বিগুণ লাভ হয় বলে কৃষক কচু চাষের দিকে ঝুঁকছে।’
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মাসুম ভুইয়া বলেন, ‘মুখী কচু চাষে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।’
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ