কয়েকদিন ধরে শীত পড়তে শুরু করেছে। তাই মৌসুম শুরু হতে না হতেই খেজুর রস আহরণে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে শুরু করেছে গাছিরা। জেলার গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচাছোলা ও নলি বসানোর কাজ করছেন। এর কয়েকদিন পরই গাছিদের মাঝে খেজুর গাছ কাটার ধুম পড়ে যাবে। শীত মৌসুমে খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন এ অঞ্চলের গাছিরা। তৈরি হবে নানা রকমের পিঠা-পায়েস।
জানা যায়, একসময় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ঈশ্বরদী ও মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ও জীবননগর, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর, খালিশপুর ও কালীগঞ্জসহ যশোর খেজুর রস ও গুড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল। খেজুর গাছের রস থেকে উৎপাদিত গুড়ের চাহিদা দেশের বিভিন্ন স্থানেও ছিল।
এলাকার হাট-বাজার থেকে প্রতিদিন ২-৩শ’ ট্রাকভর্তি গুড় দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হতো। এমনকি দেশবিভাগের আগে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর বাজারের খেজুর গুড়ের বিশাল চাহিদা ছিল নদীয়াসহ কলকাতা অঞ্চলে। সেসময় দূরান্তের মোকামিরা এসে দুই-তিন দিন পরপর গরুর গাড়িতে ভরে ভারতের মাজদিয়া বাজারে নিয়ে যেত।
গ্রামবাংলার সে ঐতিহ্য আজ অনেকটা বিলুপ্তির পথে। কারণ ১ কেজি গুড় বানাতে শ্রম ও জ্বালানিসহ গাছিদের খরচ হয় ৪০-৪৫ টাকা। আর প্রতিকেজি গুড় বর্তমার বাজারে বিক্রি হয় ৬০ টাকায়। যে কারণে গাছিরা গুড় বানাতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে।
এছাড়া আগের মতো খেজুর গাছও নেই। প্রতিদিন ইটভাটায় জ্বালানির কাজে নিধন হচ্ছে এলাকার শতশত খেজুর গাছ। ফলে এ অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তারপরও গাছিরা তাদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ