শুধু খামার নয় যেন সিদ্দিকের মিনি মিউজিয়াম

313

খামার

লালমনিরহাট থেকে: আমরা স্বপ্ন দেখি। আর সেটা বড়ই হয় সাধারণত। কিন্তু বাস্তব অনেক কঠিন। কিন্তু কঠিন বাস্তবতার মাঝেও একজন আবু বক্কর সিদ্দিক যে স্বপ্ন দেখায় তা সত্যি অনুকরণীয়। আসুন একজন সিদ্দিকের গল্প নয় সত্যি কাহিনি শুনি।

নাম তার আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ি ইউনিয়নের হাজিগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা। পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী হলেও তিনি এখন দক্ষ খামারি।

আবু বক্কর সিদ্দিক চা বিক্রি করে প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন। কঠোর পরিশ্রম করে বাড়ির পাশে ৬৪ শতাংশ জমি কিনে সেখানে লিচু বাগান তৈরী করেন। একসময় সেই লিচু বাগানের পাশে খামার করার ইচ্ছে জাগে তার।

এরপর প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব উদ্যোগে গড়া ‘‘একটি বাড়ি একটি খামার’’ প্রকল্পের সদস্য হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করেন তিনি। সেখানে দুই বছরে চার হাজার ৮০০ টাকা সঞ্চয় করেন। তার সঞ্চয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া সমপরিমাণ কল্যাণ অনুদান। এরপর সেখান থেকে তিনি ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন।

সেই ঋণের টাকায় দুইটি ছাগল কিনে গড়ে তোলেন একটি খামার। পরে সেখানে তিনি দুইটি উন্নত জাতের ভেড়া পালতে শুরু করেন। এসব উন্নত জাতের ভেড়া ও ছাগলের দামও বেশ চড়া। প্রতিটি গড়ল ভেড়ার মূল্য আকার ভেদে ১৫-২৫ হাজার টাকা।

খামারের প্রতিটি ভেড়া ও ছাগলকে তিনি প্রতিদিন শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করান। শুধু ছাগলই নয়, পাশেই গড়ে তুলছেন দেশি হাঁস, মুরগি, টার্কি, খরগোস, কোয়েল ও কবুতর খামার। মিনি মিউজিয়াম হিসেবে অনেকেই খামারটি দেখতে আসেন। এটি আরো দর্শণীয় করতে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ছাগলের আয় ধীরে ধীরে তাকে খামারি করে তুলেছে। কম খরচে একটু পরিচর্যা করলে গাড়ল জাতের ভেড়া পালন করে বেশ মুনাফা অর্জন করা সম্ভব। এখন তার স্বপ্ন এটাকে মিনি মিউজিয়াম তৈরি করা।

শুধু সিদ্দিক নয়, প্রধানমন্ত্রীর উপহার একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সঞ্চয় ও ঋণে খামার করে অনেকেই সাবলম্বী হয়েছেন। বেকারের দুঃখ ঘুচিয়ে দক্ষ উদ্যোক্তা হয়ে তারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।

একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদিতমারী উপজেলার সমন্বয়কারী ফরহাদ আলী রানা জানান, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ১৫৩টি সমিতির মাধ্যমে ৮ হাজার ৪২২ জন সদস্য সঞ্চয় করেন ৩ কোটি ৬ লাখ টাকা। প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণ অনুদান আসে ২ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার টাকা। গত ৫ বছরে সদস্যদের মধ্যে শতকরা ৮ টাকা সুদে প্রায় ১১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ঋণ দিয়ে আদায় হয় ৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এসব ঋণে সদস্যরা বিভিন্ন ধরনের খামার গড়ে তুলে নিজেদের সাবলম্বী করার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন