দেশে প্রথমবারের মতো হলুদ চেরি টমেটোর জাত অবমুক্ত করেছে রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল গবেষক। টমেটো স্বল্পকালীন ফসল হলেও নতুন এই টমেটোর ফলন মিলবে ছয় মাস পর্যন্ত। এর ফলে দেশের ফসলে নতুন এক মাত্রা যোগ হলো। ড. জামালের নেতৃত্বে ৫ বছর গবেষণার সফলতার ফলস্বরূপ জাতটি অবমুক্ত করা হলো।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ফসলে নতুন এ জাতের টমেটোর নাম যোগ হওয়ায় একটা ভিন্নমাত্রা তৈরি হলো। দেশে প্রচলিত অন্যান্য জাতের চেয়ে নতুন উদ্ভাবিত হলুদ চেরি টমেটো। এদিকে ফলনও বেশি আবার স্বাদে চমৎকার। টমেটোর নতুন এ জাত অবমুক্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক ড. আ ফ ম জামাল উদ্দিন বলেন, আমি খুবই খুশি ও সন্তুষ্ট। দীর্ঘ সময়ের পরিশ্রমের ফল পেয়েছি। শিক্ষার্থীরাও অনেক পরিশ্রম করেছে। তারাও আজ সফল।
গত নভেম্বর মাসে চেরি টমেটো নামে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদন দেয়া হয়। জাতটির উৎস দেশ হলো জাপান। অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের আবহাওয়ায় উপযোগী হলুদ চেরি টমেটোকে আমরা বলছি গোল্ডেন পূর্ণা অর্থাৎ ফলটি একেবারে হলুদ নয়, অনেকটা গোল্ডেন রঙের আর যখন প্রাপ্ত বয়স্ক হয় তখন একেবারে পূর্ণ (চারপাশ সমান) হয়ে যায়। তিনি বলেন, এই জাতটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ফল পাকবে আর গাছ বড় হবে, আবার ফল ধরবে। একসঙ্গে সব ফল পাকবে না। তাতে কৃষকের সব ফল একসঙ্গে সংগ্রহ করতে হবে না। এতে তারা ভালো লাভবান হবেন। এ ছাড়া জাতটি অপি (অপেন পলিনেটেড) অর্থাৎ কৃষক নিজেই বীজ উৎপাদন করতে পারবেন, যোগ করেন তিনি। ড. জামাল এ প্রতিবেদককে জানান, হলুদ চেরি টমেটোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো দীর্ঘদিন ফল পাওয়া যাবে, দেশে প্রচলিত টমেটোর চেয়ে দ্বিগুণ ফলন হবে, সহজেই চাষিরা বীজ তৈরি করে পরবর্তী সময়ে উৎপাদন করতে পারবেন। চারা রোপণের ৩০ দিন পর থেকে ফলন মিলবে। এবং প্রতি সাত দিন পরপর ফুল আসবে ও ফল ধরবে। এভাবে ছয়মাস ফল পাওয়া যাবে। আর দেশে চাষ করা টমেটোর চেয়ে প্রতি হেক্টরে দ্বিগুণ ফলন মিলবে। প্রতি হেক্টর ১৬০ থেকে ১৭০ টন চেরি টমেটো পাওয়া যাবে। ভিটামিন এ সমৃদ্ধ চেরি টেমেটোতে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে।
এখন যদি কোনো কৃষক চেরি টমেটো চাষ করতে চান তাহলে কীভাবে বীজ পাবেন এ প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক জামাল জানান, আমাদের (শেকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগে) সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা প্রাথমিকভাবে বীজ দিয়ে দেব।