শেডে সঠিক ব্যবস্থাপনায় তাপজনিত ধকল নিয়ন্ত্রণ

451

700000oad

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার ডেস্ক: বাংলাদেশে বেশিরভাগ খামারই খোলা হাউজ পদ্ধতিতে পোল্ট্রি পালন করে থাকেন । পোল্ট্রি সেডের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শেড নির্মাণের সময় থেকেই এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে ঘর পূর্ব -পশ্চিম লম্বা করে নির্মাণ করতে হবে । কারণ, উওর -দক্ষিণ লম্বা ঘরে পূর্ব -পশ্চম লম্বা ঘরের চেয়ে বেশি দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যের আলো পড়ে না । ফলে পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা ঘর অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকে । শেডে প্রবেশের পথে উঁচু গাছ , জঙ্গল ,উঁচু বড় দালান বা অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে ঘরের স্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় । এসব কারণে স্বভাবতঃই ঘরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় । এতে যে শুধুমাত্র তাপমাত্রাই বাড়ে তা নয় বরং শেডের বিশুদ্ধ বায়ুর পরিমাণও কমে যায় । এবং ঘরের ভেতর ক্ষতিকর গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় । কাজেই , খামারের শেড নির্মাণের আগেই বিষয়টির দিকে দৃষ্টি দেয়া একান্ত প্রয়োজন ।

খোলা হাউজ পদ্ধতিতে আংশিক দেয়াল দেয়ার ব্যবস্থা থাকে । আমাদের দেশে বায়ুপ্রবাহের গতি সাধারণত কম থাকে কাজেই আংশিক দেয়াল দেয়ার ব্যবস্থা থাকে । আমাদের দেশে বায়ুপ্রবাহের গতি সাধারণত কম থাকে কাজেই আংশিক দেয়ালের উচ্চতা যদি ৫০ সেন্টিমিটারের বেশি চওড়া হয় তাহলে ঘরে বাতাসের প্রবাহ কমে গিয়ে ঘরের তাপমাএা বৃদ্ধি পাবে । খামারের শেডের পারস্পারিক দূরত্ব যদি খুব কম হয় তাহলে এ সমস্যা আরো প্রকট হয় ।

ঘরের চাল ও পাশের দেয়ালের মধ্যে ন্যূনতম ৪৫ ডিগ্রি কোণ সৃষ্টি করতে হবে । আমাদের দেশে পোল্ট্রি শেডের চালা টিনে তৈরি হয় । উত্তপ্ত ঘরের আবহাওয়া যেন বেশি গরম না হতে হয় । মেঝে থেকে ছাদের দূরত্ব বেশি হলে ঘরের তাপমাএা কম হয় । সাদা রংয়ের বিকিরণ ক্ষমতা কম বলে দেয়াল ও সিলিংয়ের রং সাদা হওয়াই বাঞ্চনীয় ।

বর্তমানে কিছু খামারী ঘরের তাপমাএা কম রাখার জন্য টিনের চালে বিশেষ ধরনের রং ব্যবহার করে থাকেন । পরিচালনা বাতাসের প্রবাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে ফ্যানের ব্যবস্থা করে থাকেন । পরিচালনা পদ্ধতিতে যাতে তাপ কমে সেজন্য ঘরে বাতাসের প্রবাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে । একজাস্ট ফ্যানসহ শেডের ভেতর ফ্যানের ব্যবস্থা করে ঘরের তাপমাএা কম থাকে ও পোল্ট্রির শরীরের তাপমাত্রা হ্রাসে সহায়ক হয় ।

সাধারণত: বায়ুপ্রবাহের বিপরীত দিকে একজাস্ট ফ্যান স্থাপন করতে হয় । ঘরে ১২ মিটারের বেশি প্রশস্ত হলে দু’পাশেই একজাস্ট ফ্যান দিতে হবে । তবে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেঃ এর বেশি হলে বাতাসের অতিরিক্ত প্রবাহ মুরগির–শরীর থেকে তাপ বেরিয়ে যেতে সহায়তা করে । সূর্যের প্রখর তাপ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য পোল্ট্রি হাউজের আশে পাশে ছোট বড় গাছ লাগানোর উচিত। তবে , গাছ নির্বাচনের সময় খেয়াল রাখতে হবে এরা যেন স্বাভাবিক বায়ুপ্রবাহের ও পোল্ট্রি শেডে প্রয়োজনীয় সূর্যকিরণ প্রদানে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় এবং গাছপালার কারণে যাতে পোকা মাকড়ের উপদ্রব না বাড়ে ।

ঘাসবিহীন মাটি থেকে তাপ বিকিরণ হয় সহজে । এজন্য শেডের চারপাশে ঘাস, লতা-পাতা শাকসবজি প্রভৃতি থাকলে শেডে তাপমাত্রা কম থাকে । তবে শেডের পাশের তিন মিটার স্থান খুব ছোট করে ছাটা ঘাসে আবৃত থাকা ভাল । তা না হলে খামারে পোকামাকড়ের মাধ্যমে রোগের সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে ।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪.কম/এম