সচেতনতায় বদলে গেছে গুলশান লেকপাড়ের চিত্র

413

গুলশন লেক

এই তো সেদিন গুলশান লেক এবং গুদারাঘাট থেকে দারোগাবাড়ি মোড় পর্যন্ত লেকপাড়ের দৃশ্য ছিল ভিন্ন। এই রাস্তা ধরেই হেঁটে চলতে প্রতিদিন হাজারও দর্শনার্থী-পথচারীকে পড়তে হতো বিড়ম্বনায়। পরিচ্ছন্ন এই ফুটপাত ধরে মানুষ হেঁটে যেত নাকে রুমাল চেপে, কারণ সেখানে তীব্র দুর্গন্ধ। এই রাস্তায় ঝিলের পাড়ে ফেলে রাখা হতো ময়লা-আবর্জনা। বাসাবাড়ি, দোকানের উচ্ছিষ্টেয় অনেকটা ভাগাড়ে পরিণত হয়েছিল এই এলাকা।

কিন্তু এই পরিস্থিতি এখন বদলে গেছে। কিছুদিন আগেও লেকপাড়জুড়ে তৈরি হয়েছিল আবর্জনার স্তূপ, পড়ে থাকতে দেখা যেত পরিত্যক্ত ব্যবহার্য নানা জিনিস, নষ্ট হয়ে যাওয়া টয়লেটের কমোড, বেসিনের ভাঙা অংশও। সেই সঙ্গে এই এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা অস্থায়ী খাবারের দোকানের উচ্ছিষ্ট খাবারসহ আশপাশের গৃহস্থালি বর্জ্য। এসব বর্জ্য গিয়ে মিশত হাতিরঝিলের পানিতে। সেই সঙ্গে ওয়াটার ট্যাক্সি চলাকালে সেখানকার পানিতে সৃষ্ট ঢেউয়ের সঙ্গে ময়লা-আবর্জনার মাখামাখিতে তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হতো দর্শনার্থী-পথচারী।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে গুলশান লেকপাড় এবং গুদারাঘাট থেকে দারোগাবাড়ি মোড় পর্যন্ত লেকের দুই পাশে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। ১০ দিন ধরে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এই লেকের দুই পাড়ই পরিষ্কার করে ফেলছেন। পাশাপাশি দর্শনার্থী-পথচারীরাও যেন পাড়ে ময়লা না ফেলেন সেজন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে ফুটপাতে রোড লাইটের স্ট্যান্ডে বসানো হয়েছে ময়লা ফেলার ঝুড়ি।

ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং লেকপাড়ে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের সমন্বয়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন ধরে লেকপাড়ের ময়লা-আবর্জনা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। পাশাপাশি মাইকিং করে এলাকাবাসীকে জানানো হবে যেন তারা লেকপাড়ে ময়লা-আবর্জনা না ফেলে। কেউ ময়লা ফেললে জরিমানা করা হবে।’ লেকপাড়ের ফুটপাত ধরে প্রতিদিন প্রাতঃভ্রমণে বের হন স্থানীয় বাসিন্দা আকবর আলী।

তিনি বলেন, লেকপাড়ের ফুটপাতটা খুব পরিচ্ছন্ন কিন্তু লেকের পানির পাশে সবাই ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভাগাড়ে পরিণত করেছিল। তবে কিছুদিন ধরে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে লেকপাড় পুরোই পরিচ্ছন্ন করে ফেলা হয়েছে। ফলে একটা দারুণ পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে, নেই কোনো দুর্গন্ধ। মানুষ ইচ্ছা করলেই পাড় ধরে একদম পানির কাছে গিয়ে দাঁড়াতে পারছেন। কিন্তু সবার সচেতন হয়ে এ পরিবেশ ধরে রাখতে হবে, কারও এখানে ময়লা ফেলা যাবে না।

লেকপাড়ের পাশেই একটি বাসার ভাড়াটিয়া জামিল উদ্দিন বলেন, আগে আশপাশের বাসার গৃহস্থালি ময়লাসহ পরিত্যক্ত জিনিস লেকপাড়ে ফেলত সবাই। ফলে লেকপাড়ের পরিবেশ নষ্ট হতো। কিন্তু এখন এখানে খুবই চমৎকারভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন যদি প্রতিনিয়িত মনিটরিং করে এবং এলাকাবাসী-পথচারী যদি সচেতন হয় তাহলেই এ পরিবেশ ধরে রাখা সম্ভব হবে। অন্যথায় আবার কিছুদিন পরে ফের ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ