সজিনা মৌসুমী ফসল। সজিনা মাঝারি আকৃতির পত্রঝরা বৃক্ষ, ৭-১০ মিটার উঁচু হয়। এর বাকল ও কাঠ নরম। যৌগিক পত্রের পত্রাক্ষ ৪০-৫০ সে.মি. লম্বা হয়। এতে ৬-৯ জোড়া ১-২ সে.মি. লম্বা বিপরীতমুখী ডিম্বাকৃতি পত্রক থাকে।
সজিনা গাছে ফেব্রুয়ারী-মার্চ মাসে ফুল আসে। মুকুল ডাঁটাগুলো ছড়ানো, গুচ্ছবদ্ধ ও ৫-৮ সে.মি. লম্বা। মিষ্টি গন্ধে সবুজের আভাযুক্ত সাদা ফুল ২-৩ সে.মি. ব্যাসের হয়। লম্বা সবুজ বা ধূসর বর্ণের সজিনা ফল গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকে। এক একটি ফল ৯টি শিরাযুক্ত ২২-৫০ সে.মি. বা কখনো কখনো এর বেশী লম্বা হয়।
সজিনার আদি নিবাস ভারতের পশ্চিমাঞ্চলও পাকিস্তান। বাংলদেশের উত্তরাঞ্চলে এটি হেজ (hedge) হিসেবে এবং বাড়িঘরে সবজি হিসেবে ব্যবহারের জন্য রোপণ করা হয়। যে কোনো ধরণের মাটিতে এটি হলেও ৭৫০-২১২৫ মি.মি. বৃষ্টিপাত সজিনার জন্য উত্তম। কিন্তু এটি জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না।
(১) শ্বেত সজিনা (অপর নাম কৃষ্ণ গন্ধা)
(২) রক্ত সজিনা (অপর নাম মধু শিগ্রুী) এবং
(৩) নীলা সজিনা বা কৃষ্ণ সজিনা।
সজিনার ঔষধি গুণ:
সজিনা ফল, মূল, ছাল ও বিচি ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়।
১। অপুষ্টি হল অন্ধত্বের অন্যতম কারণ। অন্ধত্ব নিবারণে Indian Royal Commonwealth Society for Blind প্রচুর ‘এ’ ভিটামিন সমৃদ্ধ সজনে পাতা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
২। মূলের ছাল বায়ুনাশক, হজম বৃদ্ধিকারক এবং হৃৎপিন্ড ও রক্ত চলাচলের শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
৩। মূলের ছালের জলীয় নির্যাস স্নায়বিক দুর্বলতা, তলপেটের ব্যথা ও হিষ্টেরিয়া চিকিৎসায় উপকারী।
৪। সজিনা ফলের নির্যাস যকৃৎ ও প্লীহার অসুখে, ধনুষ্টঙ্কার ও প্যারালাইসিসে উপকারী।
৫। সজিনার বীজ Fixed oil রয়েছে, যা প্রদাহবিরোধী (Ghani, 2002) তাই (ক) বিচির তেল বাত রোগের চিকিৎসায় মালিশ হিসেবে ব্যবহার হয়।
৬। সজিনার শিকড়ের ক্বাথ গেঁটে বাত, কটি বেদনা ও সাধারণ বাত রোগে দুধের সাথে ব্যবহার হয়।
৭। শরীরে কোনো অঙ্গ মচকালে বা থেঁতলালে আদা ও সজনে ছাল বাটা প্রলেপ দিলে উপশম হয়।
অন্যান্য ব্যবহার:
সজিনা ফল ও পাতা পুষ্টিকর তরকারি ও পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়। বীজের তেল পারফিউম ও কসমেটিকে ব্যবহার হয়।
ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ