সবজিতে জ্যাসিড পোকার আক্রমণে ক্ষতির লক্ষণ ও সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা

501

big_43d0c5615c815ea6131f8dc89bb7929b_09-06-17_788_Jasid

সবজিতে জ্যাসিড পোকার পরিচিতি

ক) জ্যাসিড একটি বহুভোজী পোকা এবং বাংলাদেশের কিছু কিছু অঞ্চলে বেগুনের প্রধান ক্ষতিকর পোকা। বেগুন ছাড়াও এই পোকা আরও অনেক সবজিতে ক্ষতি করে থাকে, যেমন- আলু, ঢেঁড়স, মরিচ, কুমড়া জাতীয় সবজি এবং তুলায় আক্রমণ করে থাকে।

খ) ধারালো অভিপজিটর দিয়ে কচি পাতার মধ্যশিরা বা প্রধান শিরার কিছু অংশ ছিদ্র করে তাঁর মধ্যে একটি একটি করে ১৬-২২ টি ডিম পাড়ে। ৫-৮ দিন পর ডিম থেকে হলুদ রঙের নিম্ফ বের হয়।

সবজিতে জ্যাসিড পোকার আক্রমণে ক্ষতির লক্ষণ
ক) চারা থেকে ফসল সংগ্রহ পর্যন্ত যেকোন সময় গাছে জ্যাসিড পোকা আক্রমণ করে থাকে। এরা পাতা থেকে রস চুষে খায়।

খ) জ্যাসিড পোকা এক ধরণের বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণ করে যার ফলে আক্রান্ত পাতা বিবর্ণ হয়ে যায় ও নীচের দিকে কুঁচকে যায়। পরবর্তীতে পাতার কিনারা হলুদ হওয়াসহ পাতায় মরিচা রঙ হয়।

গ) জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাসে এই পোকার আক্রমণ কমে যায়। জ্যাসিডের একটি প্রজাতি ক্ষুদে পাতা রোগের জীবাণু ছড়ায়।

সবজিতে জ্যাসিড পোকার সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা

ক) জ্যাসিড পোকা দমনের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে বেগুনের চাষাবাদ করতে হবে।

খ) জ্যাসিড পোকা দ্বারা আক্রান্ত গাছে ছাই ছিটিয়ে দিতে হবে।

গ) অনেক সময় চারা রোপনের সময় পরিবর্তন করে জ্যাসিড পোকার আক্রমণ অনেকাংশে কমানো যায়।

ঘ) এছড়াও এই পোকা দমনের জন্য ফাঁদ শস্য চাষ করা যেতে পারে, যেমন বেগুন- ক্ষেতের চারদিকে ঢেঁড়স লাগানো যেতে পারে।

ঙ) বেগুন ক্ষেতে ইউরিয়া সারের পরিমিত মাত্রাসহ সর্বদা সুষম সার ব্যবহার করতে হবে।

চ) হাত জাল দ্বারা জ্যাসিড পোকা সংগ্রহ করতে হবে এবং ধ্বংস করতে হবে।

ছ) ক্ষেতে মাকড়সা সংরক্ষণ করে এই পোকা দমন করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে ১টি মাকড়সা গড়ে দিনে ২-১৫ টি জ্যাসিড শিকার করে খায়।

জ) ০.৫% ঘনত্বের সাবান পানি অথবা ৫ মিলি তরল সাবান প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।

ঝ) ৫০০ গ্রাম নিম বীজের শাঁস পিষে ১০ লিটার পানিতে ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে তা ছেঁকে জ্যাসিড আক্রান্ত ক্ষেতে স্প্রে করলে উপকার পাওয়া যায়।

ঞ) পোকার আক্রমণ বেশী হলে দমনের জন্য প্রতি লিটার পানিতে ডায়মেথোয়েট ৪০ ইসি (রগর, টাফগর, সানগর, পারফেকথিয়ন) ১ মিঃ লিঃ মেটাসিস্টক্স ১ মিঃ লিঃ এসাটাফ-১.৫ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করা যেতে পারে।

আরও তথ্যের জন্য আপনার নিকটস্থ উপসহকারী কৃষি অফিসার অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করুন।

তথ্য সূত্র- উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

ফার্মসএন্ডফার্মার/২৯ফেব্রু২০