সহজেই বাড়ির আঙিনায় টবে আঙ্গুর চাষ করবেন যেভাবে

1281

আঙুর বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ফল। কিন্তু এর চাষাবাদ তেমন বিস্তৃত নয়। ইচ্ছে করলেই আপনি আপনার বাড়ির ছাদে/ বারান্দায় টবে এ ফলের চাষ করতে পারেন।

টবে আঙ্গুর গাছকে সহজে যত্ন নেয়া যায় বলে এবং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত স্থানান্তর করা যায় বলে আমাদের দেশের শহরাঞ্চলে সাধারণত টপ পদ্ধতিতে আঙ্গুর গাছ রোপণ করা হয়ে থাকে। প্লাস্টিকের টব কিংবা মাটির টব দুই উপায়েই আঙ্গুর গাছ লাগানো যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন টবের আকার সঠিক হয় এবং গাছ যথেষ্ট পরিমাণে প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান মাটি থেকে পায়। এখানে টবে আঙ্গুর চাষ এর নিয়ম কানুন এর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।

আঙুরের বংশ বিস্তারের জন্য বীজ, কাটিং, গুটিকলম ও বাডিং পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কলম তৈরির মাধ্যমে বংশ বিস্তার করলে চারার বৈশিষ্ট ঠিক থাকে এবং দ্রুত ফল আসে।

আঙ্গুর চাষে টবের আকার:

আঙ্গুর চাষ করতে চাইলে সর্ব নিম্ন ১৪”/১৪” ইঞ্চি টব প্রয়োজন। এছাড়া ১৮” এর থেকে বড় ড্রামে ২টি গাছ লাগানো যায়।

টবের মাটি তৈরি:

টবে গাছের চারা লাগাতে হলে তার আগে মোট মাটির তিনভাগের একভাগ পরিমান পচা গোবর সারের সাথে ১০০ গ্রাম টিএসপি ৫০ গ্রাম এমওপি সার ভালোভাবে মিশিয়ে ১০ দিন রেখে দিতে হবে । মনে রাখতে হবে রাসায়নিক সারের পরিমাণ নির্ভর করবে টবের সাইজের উপর। এই হিসাবটি ১৬” টবের জন্য তৈরি করা। টবের আকার যদি আরো বড় হয় তবে ওই একই অনুপাতে প্রয়োজন মত রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে।

পানি সেচ দেয়া:

টবে আঙ্গুর গাছের পানির চাহিদা তুলনামূলক একটু বেশি থাকে যার কারণে প্রায় প্রতিদিন টবের গাছে পানি দিতে হয় । মাটির অবস্থা দেখে পানি দেয়া উচিৎ। ফল আসা শুরু হলে টবের নিচে জলকানদা ব্যবহার করতে হবে। কারণ ফল বা ফুল আসা অবস্থায় পানির অভাব হলে ফল ও ফুল ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কীটনাশক প্রয়োগ

আঙ্গুর গাছে পোকামাকড়ের উপদ্রব দেখা দিলে রিপকরড / ডেসিস ঔষধ টি প্রতি লিটার পানিতে ১ এম এল করে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ‌।

গাছে মুচি আসার পর প্রায় সময় দেখা যায় মুচি পড়ে যায় বা কালো হয়ে যায় । এ অবস্থা থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে bavistin বা tilt প্রতি লিটার পানিতে ১ এম এল করে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

আঙ্গুর গাছের ফল অনেক সময় অপুষ্টিজনিত ঘাটতির কারণে ঝড়ে পড়ে এবং বড় হতে চায় না । এ অবস্থায় ফল ঝরা বন্ধ করবার জন্য ও সঠিক মাত্রায় বৃদ্ধি নিশ্চত করতে ভেজিম্যাক্স ২গ্ৰাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। এই ঔষধ টি ব্যবহার করলে আগুর গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়।

পরিচর্যা :

মাটিতে যেন অম্লের পরিমাণ বেড়ে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। ফলের গুণাগুণ বৃদ্ধির জন্য আঙুরের গুচ্ছ থেকে অপরিণত ফল ছোট অবস্থায় ফেলে দিতে হবে। আঙুর পাকার মাসখানেক আগে ২০গ্রাম পটাশ সার এক লিটার পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিলে আঙুরের মিষ্টতা বাড়ে। যখন আঙুর মুগডালের মতো হবে, তখন জিবরেলিক এসিড নামের হরমোন গাছে স্প্রে করলে ফল ঝরা বদ্ধ হবে। আঙুরের আকার বড়, মিষ্টি এবং ফেটে যাওয়া রোধ করবে। প্রয়োজনবোধে বালাইনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

ফল সংগ্রহ:

ফল পাকার পর এমনভাবে সংগ্রহ করতে হবে যেন থোকার আঙুরে আঙুলের ছোঁয়া না লাগে। প্রতিটি গাছ থেকে গড়ে ৮ থেকে ৮ দশমিক ৫কেটি পাকা আঙুর পাওয়া যেতে পারে।

ফার্মসএন্ডফার্মার/০৪অক্টোবর২০