সাকার মাউথ ক্যাটফিসে ক্ষতির আশঙ্কায় উপকূলীয় মৎস্যচাষিরা

1600

ক্যাট-ফিস

পিরোজপুর সংবাদদাতা: সাকার ফিস অথবা সাকার মাউথ যে নামেই ডাকি না কেন, এটা এক ধরনের শোভাবর্ধনকারী অ্যাকুরিয়ামের মাছ। কিন্তু বর্তমানে এই মাছ অ্যাকুরিয়ামের বাইরেও পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জলাশয়ে। আর তাই ক্ষতির আশংকা বেড়েছে মৎস্যচাষিদের মধ্যে।

গ্রামাঞ্চলের অনেকের কাছেই এই মাছ একদম নতুন ধরনের একটি প্রজাতী। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকায় এই মাছ গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে।

অনেকেই এটাকে বিরল প্রজাতীর মাছ বলে মনে করেন। কিন্তু এটা বিরল নয়। দক্ষিণ আমেরিকাতে এটা সহজলভ্য। পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের মাছের খামারগুলোতে এই মাছ খুব সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে এই মাছ খুব ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সেখানকার মৎস্য চাষিরা এই মাছ দ্বারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই তারা দেশটির সরকারের কাছে পরিত্রাণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। সরকারও এই মাছ নিয়ে খুব সমস্যায় পড়েছে। সেখানে এ মাছের আঘাতে অন্য সব চাষ করা মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে সাধারণভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না চাষকৃত মাছ। বিপাকে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা।

সাকার মাউথ ক্যাটফিস যে হারে উকূলীয় এলাকায় ধরা পড়ছে, তাতে বাংলাদেশের জন্যও আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত এই মাছের বংশ বৃদ্ধি রোধ না করতে পারলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উপকূলীয় মৎস্য চাষিরা।

এখন এই মাছ শুধু মাত্র নদী বা খালে নয়। দেখা যাচ্ছে পুকুরসহ বিভিন্ন মাছের ঘেরেও। তাই কিছুটা হলেও ভাবিয়ে তুলছে মৎস্য চাষিদের। মাছটির গায়ে ছোট ছোট কাঁটা রয়েছে। পিঠের উপরে ও দুই পাশে রয়েছে আরও তিনটি বড় কাঁটা। মুখের মধ্যে রয়েছে ধারালো দাঁত। এরা আগাছা, জলজ পোকামাকড় ও বিভিন্ন ধরনের ছোট মাছ খেয়ে থাকে। ডোরা কাটা দাগওয়ালা এই মাছ প্রথম দেখে অনেকেই চমকে উঠেছেন।

শনিবার পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ইন্দুরকানী গ্রামের মৎস্যচাষি শাহাদাত হোসেনের বাড়ির পুকুরে সাকার মাউথ ক্যাটফিস ধরা পড়ে। তার দুই দিন বাদেই আবার একই গ্রামের হারুন অর রশিদের বাড়ির পুকুরেও ধরা পড়ে এই মাছ।

শাহাদাত হোসেন জানান, সাকার মাউথ ইদানীং প্রায়ই আমাদের এলাকায় দেখা যাচ্ছে। আগে এতোটা দেখা যেত না।

উপকূলজুড়ে সিডরের আঘাতে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এর পর থেকেই এই মাছ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় কম বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে শীত-গ্রীষ্ম মৌসুমে উপকূলীয় এলাকার নদী খাল ও পুকুরগুলোতে এই মাছের বিচরণ দেখা যায়।

ইন্দুরকানী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শেখ আসাদুল্লাহ জানান, সাকার মাউথ ক্যাটফিস আমাদের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা এখনও জানা যায়নি। তবে এ মাছ নিয়ে বাংলাদেশে গবেষণা চলছে। এই মাছ খাওয়ার যোগ্য না। কিন্তু খুব দ্রুত বংশ বিস্তার করতে পারে। আবার সহজে মরেও না। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এই মাছ অ্যাকুরিয়ামের শোভাবর্ধনের জন্যই আনা হয়েছিল এই দেশে। কিন্তু এখন সেটা আর অ্যাকুরিয়ামের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রায়ই দেখা মিলছে জেলেদের জালে।’

Rafid

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন