সার-খাদ্য মিশিয়ে পঁচানো, বোঁকামি নাকি ধোঁকামি!

681

অনেক সময় চাষীদের সাথে সার কিংবা খাদ্য কিভাবে দেন জিজ্ঞাসা করলে ওনারা যা বলেন তা এ রকম;
ওনারা বলেন যে, খৈল, কুড়া, আটা, গমের ভুষির সাথে ইউরিয়া ও টিএসপি মিশিয়ে ৭-৮ দিন ভিজিয়ে রেখে ভাল করে পচিয়ে তার পর পুকুরে ছিটাচ্ছি এবং এভাবেই খাওয়াচ্ছি!”

এমনটা যারা করেন তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, দুই-তিন টা ব্যাপার গড়বড় হয়ে গেছে! আপনার ইউরিয়ার বেশীর ভাগই উড়ে গেছে!
# ইউরিয়ার এ্যাকশন থাকলে কিন্তু আপনার মাছ মরেই যেত!
# আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, ইউরিয়া ভীষণ “বিষাক্ত”!
# আপনার খাদ্য উপাদান গুলি আর খাদ্য নাই; ওগুলি পঁচন হয়ে ওগুলির সার পদার্থ বেড়িয়ে গেছে; হেতু ওগুলি অসার পদার্থে পরিনত হয়েছে;(যদিও ওগুলি মাছ ধুমধাম করে খাবে!)

# এই সার আর খাবার এক সঙ্গে পুকুরে যাওয়ায় এক কালীন এত খাবারের (যদিও পুষ্টি বেড়িয়ে যাওয়া) উপস্থিতিতে মাছ বেশী খেয়ে ফেলার কারনে “অতি ভোজন” জাতীয় সমস্যার মুখামুখি হতে পারে!
খেয়াল রাখবেন যে, সারের কাজ হচ্ছে প্রাকৃতিক খাবার যেমন, ফাইটোপ্লাংক্টন বা উদ্ভিদ কণা, জুওপ্লাংক্টন বা প্রাণি কণা ও তলাবাসী কেঁচো জাতীয় প্রাণি সৃষ্টি করা।

প্রাকৃতিক খাবার তৈরির জন্য যা করা যেতে পারে-
বিঘার জন্য – ৫ কেজি খৈল + ২০ কেজি গোবর+ ৪০ লিটার পানি দিয়ে ৫ দিন পচিয়ে ৫ কেজি ডিএপি দিয়ে গুলিয়ে “রৌদ্রময় দিনে”
পুকুরে ছিটাতে পারেন!

আর খাবারের কাজ হচ্ছে মাছকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করা।
এখন এই দুই ধরনের সরবরাহকারী উপাদানকে এক খানে করলে কিভাবে হবে!
আমাদের দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক চাষীই খাদ্য ও সারের পার্থক্য বুঝতে চান না।
যে কোন প্রকারে কাজটি সারতে চান!

তাই অনেকেই সয়ামিল,খৈল,ব্রান,ভুট্টা ইত্যাদির সাথে ইউরিয়া,টিএসসি বা DAP মিশায়ে খাদ্য হিসেবে প্রয়োগ করেন!
এটি শ্রেফ বোকামি কিংবা মাছের সাথে ধোঁকামির পর্যায়ে পরে।
তাই এমন কাজ থেকে বিরত থাকুন!আশা করি আপনাদেরকে একটু হলেও ধারনা দিতে পেরেছি।ধন্যবাদ!

লেখক: Kazi Abeed Lateef

ফার্মসএন্ডফার্মার/ ২৬ আগস্ট ২০২১