সুস্থ ও রোগ মুক্ত গরু চেনার কিছু সহজ কৌশল

661

ভেজালে ভরপুর সব জায়গা। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষ ঠকানোর নিত্য নতুন ধান্দা। আর এসব থেকে রক্ষা নেই পশুরও। নানা নিষিদ্ধ ওষুধ ও ক্ষতিকারক রাসায়নিকের সমন্বয়ে মোটা তাজা করা হয় এসব পশুকে। এমন ভেজালের ভিড়ে সুস্থ ও প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা গরু চেনা মুশকিল। তাই কোরবানি গরু কেনার আগে একনজরে জেনে নিন সুস্থ, সবল গরু চিনবেন যেভাবে-

*অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কোরবানির পশুকে মোটাতাজাকরণ ওষুধ খাইয়ে স্বাভাবিকের চাইতে অতিরিক্ত মোটাতাজা করে কোরবানির হাটে নিয়ে আসেন। এসব গরু অন্যসব গরুর চাইতে অপ্রত্যাশিত ফোলা থাকে। তাই ভালো করে লক্ষ্য করুন আপনার পছন্দের গরু চটপটে কি না? কারণ, স্টেরয়েড খাওয়ালে গরু নড়াচড়ার বদলে ঝিম মেরে থাকবে। এছাড়া স্টেরয়েড ট্যাবলেট খাওয়ানো গরুর ঊরুতে প্রচুর মাংস থাকে।

*শিং ভাঙা, লেজ কাটা, জিহ্বা, ক্ষুর, মুখ, গোড়ালি খত আছে কি না তা ভালো করে দেখে নিতে হবে।

*সুস্থ গরু চিনতে হলে পাঁজরের হাড়েও খেয়াল করতে হবে। সুস্থ গরুর পাঁজরের হাড়ে উঁচু নিচু থাকে এবং চোখে নড়াচড়া করবে।

*গরুর নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরু সুস্থ। এছাড়া গরুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি সঙ্গে সঙ্গে জিহ্বা দিয়ে টেনে নেয় তাহলেও বোঝা যায় গরুটি সুস্থ কারণ অসুস্থ পশু খাবার খেতে চায় না।

*গরুর কুঁজ মোটা ও টানটান থাকলে বুঝতে হবে গরুটি সুস্থ।

*গরুর পাঁজরের হাড়ে যে তিন কোনা গর্ত থাকে যাকে ফ্লায়েন্ট জয়েন্ট বলে। তাতে কোনা রয়েছে কিনা সেটি খেয়াল রাখতে হবে।

*কম চর্বিসম্পন্ন পশু নির্বাচন করতে চাইলে পশুটি হওয়া চাই যথাসম্ভব কম বয়স্ক, চঞ্চল যা বেশি নড়াচড়া করে পেট অপেক্ষাকৃত ছোট।

*একটি সুস্থ গরু অনুভূতি প্রবণ হবে এটাই স্বাভাবিক। যদি গরু তার ভালোলাগা বা খারাপ লাগার অনুভূতির সঠিক প্রকাশ করতে পারে তবেই সে সুস্থ ও সবল। সুতরাং বর্তমান সময়ের আলোচিত সঙ্গীত শিল্পী দম্পতির ডুয়েল বা একক গান গরুর কানের সামনে বাজিয়ে দেখতে পারেন। যদি গরু রশি ছিঁড়ে পালায় তবে বুঝবেন গরু সুস্থ। মানে তার রুচিবোধ ঠিক আছে। আর যদি দেখেন গরু বেশ উপভোগ করছে, তবে বুঝবেন রুচির সমস্যা আছে!

*আজকাল গরুর হাটে একশ্রেণীর মানুষ গরু কিনতে নয়, যায় সেলফি তুলতে। সে রকম এক গ্রুপকে ডেকে আপনি যে গরুকে নির্বাচন করেছেন তার সঙ্গে সেলফি তুলতে দিন। যদি দেখা যায়, গরু নিজেও সেলফি তোলার জন্য পোজ দিচ্ছে, তবে বুঝবেন এই গরু সুস্থ নয়। কারণ সেলফি তোলা গরুর কাজ নয়! আর যদি গরু ক্ষেপে গিয়ে তার শিং-এর ব্যবহার করতে চায়, বুঝবেন এটাই স্বাভাবিক। কেননা গরুকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ালে তার চেতনানাশ হয়। তখন গরু সেলফি, কুলফি কিছুতেই বাধা দেয় না।

*সুস্থ ও সবল মনে প্রেম থাকে। অসুস্থ ও নেশাযুক্ত মনে প্রেম-ট্রেম তেমন প্রভাব রাখে না। তাই গরু কেনার সময় খেয়াল করুন আপনার পছন্দের ষাঁড়টির সামনে দিয়ে কোনো গাভী যাওয়ার সময় তার প্রতিক্রিয়া কেমন হয়? যদি আপনার পছন্দের গরু তার সামনে দিয়ে যাওয়া বিপরীত লিঙ্গের গরুর প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখায় অর্থাৎ তার ভেতরের অনুভূতি কাজ করে তবে ধরে নেবেন গরু স্বাভাবিক আছে।

তথ্যসূত্রঃ আমার সংবাদ

ফার্মসএন্ডফার্মার/১৯সেপ্টেম্বর২০