কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই ১৯ প্রকারের দেশি নতুন জাতের আমন ধান উদ্ভাবন করে সাড়া ফেলেছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার কৃষক সেন্টু কুমার হাজং। তার উদ্ভাবিত সাতটি ধানের নাম দেয়া হলেও বাকি ধানের নাম এখনও দেয়া হয়নি।
এছাড়া গবেষণার সুবিধার্থে এবং আরও উন্নত জাত উদ্ভাবনের জন্য দেশি বিলুপ্ত জাতের ৩৫ প্রকার ধান বীজ এই কৃষক বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ করে চলেছেন। শেরপুর জেলা ও বাইরের জেলার অনেক কৃষক তার উদ্ভাবিত ধান বীজ নিয়ে চাষাবাদ করে ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছেন। বোরো জাতের ৪টি ধান নিয়ে গবেষণার কাজও তার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এভাবে ২০১৬ সালে তিনি নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করেন। তাঁর নামের সঙ্গে মিলিয়ে এই ধানের নাম রাখা হয় ‘সেন্টুশাইল’। এই ধানের চাল আতপ ও তুলসীমালা ধানের মতো চিকন হয়। ফলনও পাওয়া যায় বেশ।
প্রতি একরে ৪৫ থেকে ৫৫ মণ। ধানগাছের উচ্চতা হয় সাড়ে তিন থেকে চার ফুট। গাছ শক্ত থাকায় সহজে বাতাসে হেলে পড়ে না। বীজতলা তৈরি থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত সেন্টুশাইল উৎপাদনেসময় লাগে ১৪০ থেকে ১৫০ দিন।আর তুলসীমালার সময়কাল ১৮০ দিন। সেন্টুশাইল ধান চাষে তেমন কোনো পরিচর্যা লাগে না। পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়। দাম পাওয়া যায় তুলসীমালা ধানের মতোই।
গত আমন মৌসুমে পাঁচ একর জমিতে সেন্টুশাইল ধানের চাষ করেন নালিতাবাড়ীর কয়ড়াকুড়ি গ্রামের কৃষক নিরঞ্জন হাজং। একরে তিনি ফলন পেয়েছেন ৪৫ থেকে ৪৬ মণ। একরপ্রতি খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরীফ ইকবাল বলেন, সেন্টু হাজংয়ের উদ্ভাবিত স্থানীয় জাতের সেন্টুশাইল ধান চাষে কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। চলতি বছর প্রায় ১ হাজার একর জমিতে এই ধান চাষ করা হয়েছে। এই ধান একরে ৪৫ থেকে ৫০ মণ হয়। চাল চিকন হওয়ায় এবং দাম বেশি থাকায় এই ধান চাষে কৃষকেরা অনেক লাভবান হয়েছেন।