সৌদির মরিয়ম খেজুর চাষ করে অসাধ্যকে সাধন করেছেন চাটমোহরের শিক্ষক জলিল

1121

মরিয়ম-খেজুর
হেলাল, পাবনা থেকে: চলনবিল অধ্যুষিত পাবনার চাটমোহরে সৌদি খেজুর চাষ অলীক স্বপ্নের মতো। কারণ মরুভূমির চরমভাবাপন্ন আবহাওয়ায় উত্পাদিত ফলকে চলনবিলের নরম কর্দমাক্ত মাটিতে ফলানো অবাস্তব কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়। তবে সেই অসাধ্যকে সাধন করেছেন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল হান্ডিয়াল ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আবদুল জলিল।

বিশ্বাস, আবেগ আর ধৈর্যকে কাজে লাগিয়ে সেই অসম্ভব কল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিয়ে তার লাগানো সৌদি আরবের মরিয়ম জাতের খেজুরগাছে এবার খেজুর এসেছে।

বাড়ির সামনে সারিবদ্ধভাবে লাগানো ১৬টি সৌদি খেজুরগাছ তাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে খেজুর দেখতে। মরুভূমির গাছকে চলনবিলের উর্বর ভূমিতে লাগিয়ে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

শিক্ষক আবদুল জলিল জানান, ২০১২ সালে শিক্ষকতা জীবন থেকে অবসরে যাওয়ার পর সৌদি আরবের মক্কা-মদিনায় পবিত্র হজ পালন করতে যান। সেখানে তিনি বেশকিছু খেজুরের বাগান ঘুরে দেখেন। এ সময় তার প্রবল ইচ্ছা হয় তিনিও গ্রামের বাড়িতে সৌদি খেজুরের বাগান করবেন। পরে সেখান থেকে বেশকিছু বীজ সংগ্রহ করেন এবং হজ শেষে দেশে আসেন। বড় পরিসরে চিন্তা করার আগে তিনি বাড়ির সামনের আঙিনায় বীজ থেকে উত্পাদিত ৩৪টি চারা লাগান। কিন্তু সব গাছের চারা মারা যায়। তবে দমে যাননি আবদুল জলিল। ২০১৩ সালে প্রতিবেশী এক ব্যক্তিকে দিয়ে আবারো সামান্য কিছু মরিয়ম জাতের বীজ এনে চারা উত্পাদন করেন। বাড়ির আঙিনায় লাগান ১৬টি সৌদি খেজুরের গাছ।

গত ছয় বছর ধরে নিজেই পরিচর্যা করে গেছেন। আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে গাছগুলো। সেই গাছগুলোতে এবার এসেছে খেজুর, যা তাকে স্বপ্ন ও সাহস দেখাচ্ছে। এবার বড় পরিসরে বাগান করার চিন্তা করছেন তিনি। বীজ, সার-কীটনাশকসহ সবকিছু মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকা-এমনটিই জানালেন আবদুল জলিল।

উপজেলা কৃষি অফিসার হাসান রশীদ হোসাইনী বলেন, চলনবিল এলাকায় স্বল্প পরিসরে এই প্রথম কোনো ব্যক্তি সৌদি খেজুর চাষ করছেন। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে সব রকমের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আবদুল জলিল সফল হতে পারলে চলনবিল এলাকায় সৌদি খেজুর চাষ বিস্তার লাভ করবে এবং কৃষকরা লাভের মুখ দেখবে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন