সূর্য আর মেঘের লুকোচুরির মধ্যেই সকাল ৯:৩০ মিনিটে খোকসা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ায় দেখা মিলল স্বপ্না বেগমের (৪২)। ঘরের সামনের আঙিনায় বসে কুলায় মসুর ডাল পরিষ্কার করছিলেন তিনি। হঠাৎ আমাদের উপস্থিতি দেখে তড়িঘড়ি করে বসার জায়গা করে দিলেন।
স্বপ্না বেগম, যিনি ২০০৪ সাল থেকে ব্র্যাকের একজন সদস্য (কোড: ২১০২, সদস্য নং: ৫০), বললেন, “আমার কিছু ছিল না। আমি ব্র্যাকের সমিতিতে যোগ দিয়ে তিল তিল করে এই বাড়ির জায়গা কিনে বাড়ি করেছি। মাঠে দুই জায়গায় চাষাবাদের জমি কিনেছি। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া করিয়েছি, দুই সন্তানকে বিয়েও দিয়েছি। এসব কিছুর পিছনেই ব্র্যাকের অবদান। গরীব মানুষদের তো কেউ টাকা দিতে চাইতো না।”
এই কথাগুলো শুনে গর্বে বুক ভরে ওঠে। এমন একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে সম্মানের বিষয়।
বর্তমানে স্বপ্না বেগমের বড় ছেলে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে চাকরি করছে। স্বামী মোঃ নজরুল ইসলাম নিয়মিত ইটভাটায় কাজ করেন। প্রয়োজন ছাড়া তিনি আর লোন নেন না। বর্তমানে তার চলমান ঋণের পরিমাণ ৫০,০০০ টাকা, যা দিয়ে তিনি জমি লিজ নিয়েছেন। আরও কয়েকটি জমি তিনি লিজে নিয়েছেন, যেখান থেকে তিনি মৌসুমি ফসলের ভাগ পান।
সব মিলিয়ে এখন তিনি একটি স্বচ্ছল ও সুখী পরিবারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কথা শেষ করেই তিনি বললেন, “আমি ব্র্যাকের সাথে যুক্ত হয়েই আজ এখানে পৌঁছেছি। ধন্যবাদ ব্র্যাককে।”
এটি নিছক একজন নারীর সাফল্যের গল্প নয়, এটি একটি প্রমাণ যে, সঠিক সহযোগিতা ও কঠোর পরিশ্রম জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।