হাড়িভাঙ্গা আম বদলে দিয়েছে রংপুরের চাষিদের ভাগ্য

1280

হাড়িভাঙা

রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আম এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। আর কয়েকদিন পরেই বাজারে উঠবে সুস্বাদু এই আম। শেষ সময়ে বাগান ও আমের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আম চাষিরা। রংপুরের দুই উপজেলার হাজারো গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এই আম।

গত ৫ বছর ধরে এই আম চাষ করে রংপুরের হাজার হাজার পরিবার এখন পুরোপুরি স্বাবলম্বী। তবে মৌসুমের শুরুতে আমের দাম কিছুটা কম থাকলেও আম সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মৌসুমের শেষের দিকে বেড়ে যায় দাম। তাই আম সংরক্ষণে এ অঞ্চলে একটি হিমাগার, প্রশিক্ষণকেন্দ্র ও গবেষণাগার নির্মাণের দাবি কৃষকদের।

এতদিন রাজশাহী আর চাপাইনবাবগঞ্জের ফজলি, ল্যাংরা, মিশ্রি ভোগ আমের কদর ছিল আমাদের দেশে। কিন্তু এখন হাড়িভাঙ্গা আমের চাহিদা দেশ ছাপিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার পদাগঞ্জ গ্রামে সর্বপ্রথম হাড়িভাঙ্গা আম চাষ করে স্থানীয় লোকজন। আস্তে আস্তে এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে রংপুরের অন্যান্য এলাকায়। মাত্র ৫ বছরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ শুরু হয় পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ, রানীপুকুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। এইসব এলাকার মাটি লাল হওয়ায় ধান পাটসহ অন্যান্য ফসলের ফলন কম হওয়ায় কৃষকরা আবাদী জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হাড়িভাঙ্গা আমের চারা রোপণ করে আমের বাগান গড়ে তোলে। এখন তা পায়রাবন্দ, লতিফপুর, শাণ্টি গোপালপুর, দুর্গাপুর, ইমাদপুর, বদরগঞ্জ উপজেলার পদাগঞ্জ, শ্যামপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে হাজার হাজার বাগানে এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হাড়িভাঙ্গা আম চাষ হচ্ছে।

গত কয়েক বছর থেকে এ আমের চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমন দামও পাচ্ছেন চাষিরা। শুরুতে বাগানে ১৮শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ দরে আম বিক্রি হলেও শহরের বাজারে বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা মণ দরে। আম সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় আবার অনেকে আমের মুকুল আসার পর পরই বাগান বিক্রি করছেন পাইকারদের কাছে। জুন মাসের ১০ তারিখ থেকে বাজারে পাওয়া যাবে এ অঞ্চলের বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সরওয়ারুল হক জানান, শুধুমাত্র মিঠাপুকুর উপজেলায় ১ হাজার ৫০৭ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে হাড়িভাঙ্গা আম। এছাড়া অন্যান্য উপজেলাসহ মোট ৫ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে আম। আমের প্রধান বৈশিষ্ট হচ্ছে আমটি অত্যান্ত সুস্বাদু। কোনো আঁশ নেই। বড় ছোট দুই ধরনের এই আম খুবই মিষ্টি এবং স্বুসাদু। এর ঘ্রাণও খুব সুন্দর।

তিনি আরও বলেন, সরকারিভাবে আমটি গাছ থেকে পাড়ার পর দীর্ঘসময় সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে হাড়িভাঙ্গা আম হতে পারে রংপুরের প্রধান অর্থকরী ফসল।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন