পোলট্রি শিল্পের ইতিহাস বাংলাদেশে অনেক পুরাতন। হাঁস-মুরগি চাষ ইতিমধ্যেই লাভজনক ব্যবসা হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে, সুতরাং আপনি আপনার নতুন আয়ের উৎসের জন্য একটি খামার শুরু করতে ইচ্ছুক হতে পারেন। বিস্তারিত ভাবে বলতে গেলে পোল্ট্রিতে বিভিন্ন হাঁস মুরগি মাংসের জন্য, ডিমের জন্য বা পালকের জন্য উৎপাদন করা হয়।
গরুর মাংস এবং মাছের পাশাপাশি হাঁস ও মুরগির পণ্যগুলি প্রোটিনের প্রধান উৎস বলা হয়, এবং মুরগি মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে হাঁস-মুরগির চাষ মানুষের বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করার সুযোগ দেয়।
তবে সাধারণ মুরগির চেয়ে কড়কনাথ মুরগির চাষে লাভ বহুগুণ বেশি। এই প্রজাতির মুরগির লালন পালন করে লক্ষ লক্ষ টাকা সহজেই উপার্জন করা যায়।
এর বিশেষত্ব –
এটি ভারতের একমাত্র কৃষ্ণ বর্ণের মাংসের মুরগি। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, সাধারণ মুরগির তুলনায় এর মধ্যে অ্যামিনো অ্যাসিডের মাত্রা বেশি হলেও কোলেস্টেরলের পরিমাণ খুব কম। এটি নেটিভ বা বয়লার মুরগির চেয়ে অনেক স্বাদযুক্ত। এটি মধ্য প্রদেশের ঝাবুয়া জেলায় পাওয়া যায়, যেখানে এটি ‘কালীমাসি’ নামে পরিচিত। কড়কনাথ মুরগির মাংস, ডিম, এবং দেহের সমস্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গই কালো। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। সাথে ফ্যাটও খুব কম থাকে। সুতরাং এটি হার্টের রোগী এবং ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
কোথায় কোথায় বিশেষভাবে পাওয়া যায় –
এটি মূলত মধ্য প্রদেশের ঝাবুয়া জেলার উপজাতি অঞ্চলে পাওয়া যায়। তবে এখন ছত্তিশগড়, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের মতো অনেক রাজ্যে কড়কনাথ মুরগির এই জাতটি পাওয়া যাচ্ছে। সারাদেশে এই মুরগির চাহিদা রয়েছে বেশ। এর আবার তিনটি প্রজাতি রয়েছে যার মধ্যে জ্যাড ব্ল্যাক, পেনসিল্ড এবং গোল্ডেন কড়কনাথ রয়েছে। জেড ব্ল্যাকের ডানা পুরোপুরি কালো, পেন্সিল কড়কনাথের আকার পেন্সিলের মতো। গোল্ডেন কড়কনাথের ডানাগুলিতে সোনালি বর্ণের দাগ রয়েছে।
লাভজনক চাষ (Profitable farming) –
কড়কনাথ মুরগী চাষ করে আপনি যথেষ্ট পরিমাণে আয় করতে পারেন। যদি আপনি ১০০ টি বাচ্চা নিয়ে ফার্ম শুরু করেন, তবে এর জন্য আপনার ১৫০ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন। তবে বড় করে করতে হলে অর্থাৎ ১০০০ টি কালো মুরগির পালনের জন্য ১৫০০ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন হবে। মনে রাখবেন, পোলট্রি ফার্ম গ্রাম বা শহরের বাইরে এমন একটি জায়গায় হওয়া উচিত, যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল এবং বিদ্যুৎ রয়েছে। কড়কনাথ মুরগি এবং মুরগির জন্য একটি শেড তৈরি করা উচিত, যাতে পর্যাপ্ত আলো এবং বাতাস যেতে পারে। এর সাথে, খেয়াল রাখতে হবে, দুটি শেড একসঙ্গে যেন না হয় এবং একটি শেডে একটি প্রজাতির বাচ্চাই পালন করা উচিত। মনে রাখবেন, মুরগি এবং মুরগির ছানাকে গভীর রাতে খাবার দেওয়া উচিত নয়।
১০০০ টাকায় বিক্রয় হয় এই মুরগি –
কড়কনাথ মুরগির বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এর একটি ডিমের দাম প্রায় ৫০-৭০ টাকা। কড়কনাথ মোরগ প্রতি কেজি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রয় হয়। এর বাচ্চার দাম ৭০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়। আপনি যদি ১ হাজার কড়কনাথ মুরগি চাষ করেন তবে আপনার আয় হবে কয়েক লক্ষ টাকা।
তথ্যসূত্রঃ কৃষি জাগরণ
ফার্মসএন্ডফার্মার/১৮সেপ্টেম্বর২০