৫০ বিঘার খামার থেকে দুই বন্ধুর বছরে আয় কোটি টাকা

85

দুই বন্ধু এমদাদুল হক ও কবির আহাম্মদ। এক যুগের প্রবাস জীবন শেষে ২০১২ সালে ফেরেন দেশে। যৌথ উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় তারা গড়ে তোলেন কৃষি খামার ‘বিজনা এগ্রো ফার্ম’। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আগাম জাতের সবজি চাষে সাফল্য পেয়েছেন। সফল উদ্যোক্তা হিসেবে মেলে ধরেছেন নিজেদের। ৫০ বিঘার খামার থেকে এখন বছরে কোটি টাকা আয় করছেন দুই বন্ধু।

সরেজমিন কসবার বিজনা নদীর পাড়ে বিজনা এগ্রো ফার্মে অন্তত ৫০ নারী-পুরুষকে কাজ করতে দেখা যায়। এখানে দেশি-বিদেশি উন্নত জাতের আগাম টমেটো, শসা, করলাসহ ঋতুভিত্তিক সব ধরনের শাকসবজি চাষ হচ্ছে। আগাম জাতের তরমুজ চাষেও ভালো ফলন এসেছে। চলতি বছর খামারের ৩৫ বিঘা জমিতে চাষ করছেন শীতকালীন আগাম জাতের টমেটো। প্রায় ৬ বিঘা জমিতে চলছে কাঁচামরিচ রোপণ। শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এসে খামার থেকে প্রতি কেজি টমেটো পাইকারী ৮০-৯০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

বিজনা এগ্রো ফার্মের মালিক এমদাদুল হক ও কবির আহাম্মদ জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে টিঘরিয়ায় বিজনা নদীর পাশে ১৫ বিঘা কৃষিজমি লিজ নিয়ে কৃষি খামার করেন। দুই বন্ধুর বিনিয়োগ ছিল ১৩ লাখ টাকা। প্রথম দুই বছর লাভ হয়নি। তবে তৃতীয় বছর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সব সময় আগাম জাতের শাকসবজি চাষ করেন। বর্তমানে টমেটো বেশি করা হচ্ছে। বিশ্বাস, সততা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে দুই বন্ধু এখন এলাকার সবচেয়ে বড় কৃষি উদ্যোক্তা। সরকারের সহযোগিতা পেলে দুই বিঘা জমিতে গ্রিনহাউস করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তারা। লব্ধ জ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃষিকে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার চেষ্টায় বিভোর এমদাদ ও কবির প্রতি মাসে শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছেন প্রায় ৬ লাখ টাকা। পাশাপাশি আগ্রহী যুবকদেরও উৎসাহ দিচ্ছেন কৃষিকাজ করে বেকারত্ব দূর করার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম জানান, উচ্চমূল্যের কৃষিজাত ফসল চাষাবাদ করে সফলতা পেয়েছেন প্রবাসফেরত দুই বন্ধু এমদাদ ও কবির। তারা গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ফসল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। তাদের মতো বেকার যুবকরা কৃষিকাজে মনোযোগী হলে উৎপাদিত কৃষিপণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।