যশোর : চলতি মৌসুমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় ৮৮ হাজার ৬শ ২৪ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৮০৫ হেক্টর বেশি জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভুট্টার চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। গমে অনেক সময় পোকার আক্রমণ হয়।এতে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হন।কিন্তু ভুট্টায় পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে।তাছাড়া ভুট্টা চাষে তেমন কোন সেচের প্রয়োজন হয় না।এ কারণে অনেক চাষি গমের পরিবর্তে ভুট্টা চাষে মনোযোগী হচ্ছেন-এমনটাই মনে করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
এক সময়ের অনাবাদি ও পতিত জমিতে ভুট্টা চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।অনেক প্রান্তিক ও বর্গাচাষি অর্থকরী এ ফসল চাষে দিন দিন ঝুঁকে পড়ছেন বলে আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে। লাভজনক হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভুট্টা চাষ।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলা হচ্ছে-যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা,কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও মাগুরা।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে (২০১৮-১৯) দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ জেলায় মোট ৭৬ হাজার ৮শ’১৯ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ ৬ জেলায় ভুট্টার চাষ হয়েছে ৮৮ হাজার ৬শ ২৪ হেক্টর জমিতে।যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১ হাজার ৮০৫ হেক্টর বেশি জমি। আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বাসসকে জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় সবচেয়ে বেশি জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে।এ জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ৯শ’৫৭ হেক্টর জমিতে। ভুট্টার চাষ হয়েছে ৪৬ হাজার ১শ২১ হেক্টর জমিতে।
ঝিনাইদহ জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৪ হাজার ৯শ’২৫ হেক্টর জমিতে।ভুট্টার চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৪শ’২০ হেক্টর জমিতে।কুষ্টিয়া জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৭শ’৮০ হেক্টর জমিতে।ভুট্টার চাষ হয়েছে ৮ হাজার ৪শ’৭৫ হেক্টর জমিতে।মেহেরপুর জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে।ভুট্টার চাষ হয়েছে ১৫ হাজার ৮শ’৩৫ হেক্টর জমিতে। যশোর জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪শ’৪৭ হেক্টর জমিতে। ভুট্টার চাষ হয়েছে ৬শ’৩৮ হেক্টর জমিতে।
মাগুরা জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১শ’১০ হেক্টর জমিতে। ভুট্টার চাষ হয়েছে ১শ’২৫ হেক্টর জমিতে।আবাদকৃত জমিতে কাবেরী, সুপারসাইন-২৭৬০,সানসাইন,পাইওনিয়ার ভি-৯২ এবং এলিট জাতের ভুট্টার চাষ হয়েছে বলে তিনি জানান।
যশোর আঞ্চলিক কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক মো. ইমদাদ হোসেন শেখ বাসসকে জানান, কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ভুট্টা চাষিদের উদ্বুদ্ধকরণ,পরামর্শ,মাঠ দিবস,উঠান বৈঠক,নতুন নতুন জাতের বীজ সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভুট্টা চাষে অন্য ফসলের তুলনায় খরচ কম।ভুট্টায় পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। ফলনও বেশি। এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে ৩৩ থেকে ৪০ মণ পর্যন্ত ভুট্টা উৎপাদিত হয়ে থাকে। ভুট্টা মানুষের খাদ্যের পাশাপাশি পোল্ট্রি ফিড ও মাছের খাবার হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। বাজারে ভুট্টার চাহিদা ব্যাপক থাকায় এ অঞ্চলে ভুট্টার চাষ দিন দিন বাড়ছে বলে তিনি জানান।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন