প্রাকৃতিক খাদ্যেই করা যাবে মাছ চাষ

838

মাছ চাষের শতভাগ পরিবেশবান্ধব উপায় তৈরির জন্য গবেষণা করছেন ইন্দোনেশিয়ার এক গবেষক৷ কাজ করছেন ইউরোপের বোডেন সী বা লেক কনস্টান্সের আণুবীক্ষণিক কণা বা প্লাঙ্কটন নিয়ে৷ ৷ লেকটি জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও সুইজারল্যান্ড ছুঁয়েছে৷

জীববৈচিত্র্যের জন্য জলাশয়ের প্রয়োজনীয়তা অনেক৷ তাই বিজ্ঞানীরা এর সুরক্ষার ওপর জোর দেন৷ তবে নানা কারণে এই জলাশয়গুলোকে দূষিত করা হচ্ছে৷

এসব নিয়ে গবেষণা করছেন ইন্দোনেশিয়ার গবেষক পেলিটা অকটোরিনা৷ তিনি ইউরোপের বোডেন সী বা কনস্টান্স লেক নামে পরিচিত জলাশয়টির প্রাণিজ প্লাঙ্কটন নিয়ে কাজ করেন৷ তাঁর স্বামী ও মুহাম্মাদিয়া সুকাভূমি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোহামাদ রিদওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই লেক থেকে প্লাঙ্কটনের নমুনা সংগ্রহ করেন৷ কিন্তু কেন এই লেক বাছাই করলেন পেলিটা?

‘‘১৯৬০ সালের আগে লেকটির পুষ্টিমান ছিল অনেক কম৷ কিন্তু আশি সালের দিকে এর উর্বরতার মাত্রা অনেক বেড়ে যায়,” বলেন তিনি৷ ‘‘বাড়তে থাকা কৃষি ও ঘরবাড়ির বর্জ্যের কারণে এতে বাড়ে ফসফরাসের পরিমাণ৷ এতে সুপেয় পানির পরিমাণ কমে যায়৷”

দূষিত লেককে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার সময় জলজ প্রাণগুলো কেমন করে প্রতিক্রিয়া করে কিংবা সহনশীলতা দেখায়, তা এখনো গবেষণার বিষয়৷ পেলিটা মনে করেন, গবেষণা থেকে পাওয়া এই জ্ঞান লেকের ইকোসিস্টেম সম্পর্কে ভবিষ্যতে আরো কাজ করতে সহযোগিতা করবে৷

তিনি ডাফিনা নামের প্রাণিজ প্লাঙ্কটন নিয়ে কাজ করেন৷ এগুলো সাধারণত জলজ প্রাণ নিয়ে গবেষণার মডেল হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷ পেলিটা অকটোরিনা গবেষণার জন্য ডাফিনাসহ নানা রকম প্রাণিজ প্লাঙ্কটন নিয়ে এসেছেন তাঁর ল্যাবরেটরিতে৷
তিনি বলেন, ‘‘ডাফিনার ওপর গবেষণা করে আমরা চেষ্টা করছি অতি উর্বর লেক থেকে পরিষ্কার ও মানসম্মত লেকে পরিণত করা হলে তা সেখানে কী ধরনের পরিবেশগত পরিবর্তন আনে, তা জানতে৷”

পেলিটা ল্যাবরেটরিতে খাবার ও খাদক জলজ প্রাণীর সঙ্গে ডাফিনাগুলোকে রেখে পরীক্ষা করেন৷ খাদক জলজ প্রাণীগুলোকেও একই লেক থেকে আনা হয়েছে৷ ডাফিনার বাড়তে থাকা শরীরের আকার ব্যাখ্যা করে, শৈবাল কণাগুলোর সংখ্যা কেন কমে যাচ্ছে৷ একইসঙ্গে দেখা যায়, প্লাঙ্কটন-খাদক জলজ প্রাণীগুলোর প্রভাব কেমন করছে পড়ছে ডাফিনার ওপর৷

পেলিটা অকটোরিনা বলেন, ‘‘জার্মানিতে এই গবেষণালব্ধ জ্ঞান আমি ইন্দোনেশিয়ার প্রয়োগ করতে চাই৷ পিট লেকে আমি প্রাকৃতিক খাবারের ওপর নির্ভর করে মাছ চাষ করতে চাই৷ মাছের প্রাকৃতিক খাবার হলো ডাফিনা৷ ডাফিনা কিভাবে খাদক জলজ প্রাণীদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বাঁচে, তা যদি জানতে পারি, তাহলে পিট লেকে তা আমি ব্যবহার করতে পারি, যা জনগণের উপকারে আসবে৷ তাহলে কৃত্রিম খাবার দিতে হবে না৷ পরিবেশবান্ধব উপায়ে মাছ চাষ করা যাবে৷’

ফার্মসএন্ডফার্মার/১০মে২০