বান্দরবান থেকে: পাহাড়ে বাড়ছে বিদেশি ফল ড্রাগনের চাষ। স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় বান্দরবানে জুম চাষ ছেড়ে ড্রাগন ফল চাষে ঝুঁকছেন পাহাড়িরা।
চিম্বুক পাহাড়ের বসন্ত পাড়ায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ করে লাভবান হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পিছিয়ে পড়া ম্রো জনগোষ্ঠীর চাষি তৈয়ো ম্র্রো। চলতি বছর ৩শ ড্রাগন গাছের ফল বিক্রি করে প্রায় ৪ লাখ টাকা আয় করার স্বপ্ন দেখছেন সফল এ চাষী।
আগামী বছর দুই হাজার একশ গাছের ফল আসবে, সেগুলো বিক্রি করে কয়েকগুণ বেশি আয়ের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এ চাষি।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ড্রাগন ফল একধরনের ক্যাকটাস গাছের ফল। এ ফলের অন্য নাম পিটাইয়া। চীনে এই ফলের নাম হুয়ো লং গুয়ো, ভিয়েতনামে থানহ লং। ড্রাগন ফলের জন্ম মধ্য আমেরিকায়। দক্ষিণ এশিয়ার মালয়েশিয়ায় ফলটি প্রবর্তিত হয় বিংশ শতাব্দীর দিকে। বর্তমানে ভিয়েতনামে ফলটি বেশি চাষ হচ্ছে। ভিয়েতনাম ছাড়াও তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, চীন, ইসরাইল, অস্ট্রেলিয়াতেও চাষ হচ্ছে। ২০০৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম ড্রাগন ফলের গাছ নিয়ে আসা হয়।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আলতাফ হোসেন জানান, বিদেশি ফল হলেও পাহাড়ের জলবায়ু এবং মাটি দুটিই ড্রাগন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। পাহাড়ে ড্রাগন ফল চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ কম এবং পানির সেচ কম লাগায় এ চাষে আগ্রহী হচ্ছে পাহাড়িরা।
এদিকে কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের বালুখালী টিভি রিলে কেন্দ্রের পাশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে সম্ভাবনাময় বিরল প্রজাতের ড্রাগন ফলের চাষ। ড্রাগন চাষ নিয়ে প্রথমে শঙ্কায় থাকলেও বর্তমানে আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট চাষিরা।
খেতে সুস্বাদু পুষ্টিকর এ ফলের চাষ ব্যাপকভাবে গড়ে উঠলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে ড্রাগন ফল বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা। রিয়েন্ট বিজনেস কসসোডিয়াম নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ দুর্লভ চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন।
রিয়েন্ট বিজনেস কসসোডিয়াম প্রতিষ্ঠানের ড্রাগন ফলচাষি মামুন চৌধুরী বলেন, ড্রাগন ফলের চারা শরীয়তপুর থেকে সংগ্রহ করা হয়। তারা আমদানি করেছে থাইল্যান্ড থেকে।
কৃষি গবেষক ড. জামাল উদ্দিন বলেন, ড্রাগন চাষ অত্যন্ত ব্যয়বহুল। পাহাড়ি এবং উঁচু জায়গা ড্রাগন চাষের উপযোগী। বিশ্বে ড্রাগন ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সাধারণত ডায়াবেটিস রোগ নিবারণে ড্রাগন ফল বেশ উপকারী। এতে ভিটামিন সি’র পরিমাণ খুবই বেশি। সূত্র: জে নিউজ।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন