মানহীন পোল্ট্রি ফিড বাজারজাত করতে দেয়া হবে না

317

014

নিরাপদ পোল্ট্রি মাংম নিশ্চিতে পোল্ট্রি ফিড(খাদ্য) একটি বড় ভুমিকা পালন করে। খাদ্যের মান কিছুটা নিম্ন হলে নির্ধারিত সময়ে পোল্ট্রির বেড়ে উঠা হবে না, আর এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে ২-৩মাস মুরগি ডিম দিবে না। সেকারণে খামারীরা নিজেরা লোকসান দেবার জন্য এ ধরনের আত্মঘাতি কাজে জড়িত হবে না। তারপরও কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা যদি মানহীন ও নিম্নমানের পোল্ট্রি ফিড বাজারজাত করে থাকে তাহলে মাঠ পর্যায়ে ক্যাবের সদস্য/সদস্যা, গণমাধ্যম ও স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অফিসের লোকজনকে দিয়ে বাজার তদারকি করে এগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে সরকার পোল্ট্রি ফিডকে বিএসটিআইয়ের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। বিএসটিআই পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলি ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলিকে লাইসেন্স প্রদানের পাশাপাশি মান নিয়ন্ত্রণেও কার্যকর ব্যবস্থা নিবে। পোল্ট্রি ফিডে নানা ক্যামিকেল মিশ্রণ, কিছু কিছু নিম্নমানের খাদ্য বাজারজাত হচ্ছে বলে অনেক প্রচারণা থাকলেও মুরগির বাচ্চা ও খামারীদের দ্রুত উৎপাদন, বাজারে বিক্রিতে প্রতিযোগিতা থাকায় খামারীরা নিন্মমানের খাবার দিয়ে নিজেরা লোকসান গুনতে চায় না। আর একশ্রেণির সংবাদ মাধ্যমও দেশের আমিষের অন্যতম যোগানদাতা পোল্ট্রি মাংস নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করছে, যা তথ্য নির্ভর নয়।

আর এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য জনগণের মাঝে প্রচার অব্যাহত থাকলে দেশের পুষ্টির চাহিদা ও ঘাটতি মোকাবেলায় কঠিন হবে। যা মধ্য আয়ের দেশে উপনীত হতে বড় প্রতিবন্ধক। এ অবস্থায় পোল্ট্রি শিল্পে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে পোল্ট্রি ফিড উৎপাদন ও বিপণণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়েছে চট্টগ্রামে ক্যাব’র পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্পের উদ্যোগে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার সাথে অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেসী সভায়।

ইউকে এইড, বৃটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় প্রকাশ প্রকল্পের কারিগরি সহযোগিতায় পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন প্রকল্প, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম আয়োজনে ৩০ সেপ্টেম্বর নগরীর খুলসীতে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রিয়াজুল হক জসিম।
আলোচনায় অংশ নেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন, অতিরিক্ত জেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাহিদা আকতার, থানা পশুসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সেতু ভুষণ দাস, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ আবদুল মান্নান, ক্যাব পাঁচলাইশের সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্ষুদ্র খামারী রুখসানা আখতারুন্নবী, মোহাম্মদ জসিম উদ্দীন, আবদুর রহমান, ক্ষুদ্র পোল্ট্রি খাদ্য বিক্রেতা মো. সোসলেম উদ্দীন, মো. জসিম মাহমুদ প্রমুখ।

সভায় ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন জানান, ক্যাব সকল পর্যায়ের ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় নিরাপদ খাদ্যের বিষয়ে কাজ করছে। অনেকগুলি কাজে পরোক্ষভাবে কিছু ব্যবসায়ীরা উপকৃত হচ্ছে বলে মনে হলেও সেবা প্রদানকারীরা ঠিকে না থাকলে সামগ্রিক সেবা প্রদান ও ব্যাহত হবে। আবার ব্যবসা করতে গিয়ে ব্যবসার বিনিয়োগ খরচে বেশি হলে তার দায়ভার ভোক্তার ঘাটে পড়বে। কারণ ব্যবসায়ী সরকারি ট্যাক্স, ব্যাংকের রক্তচোষা সুদ, পরিবহন খরচ, শ্রমিকে মজুরি, রাজনৈতিক দলের চাঁদা সব কিছুরই ভার বহন করতে হয় ভোক্তাদের। সেকারণে পণ্য উৎপাদন ও ব্যবসার খরচ যাতে না বাড়ে এবং টেকসই উৎপাদন ও বিপণণ যাতে নিশ্চিত হয় তার জন্য ক্যাব অনেক জায়গায় এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে।

অ্যাডভোকেসি সভা শেষে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রিয়াজুল হক জসিমের নেতৃত্বে ক্যাব প্রতিনিধিদল সমন্বয়ে চট্টগ্রামের প্রাচীনতম পোল্ট্রি ফিড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এমএম আগার ফ্যাক্টরী পরিদর্শন করে পোল্ট্রি ফিডের সরেজমিনে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। যা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কেন্দ্রিয় পরীক্ষাগারে প্রেরণ করা হয়।

একই সাথে নাহার এগ্রোর নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন করে সরেজমিনে বিক্রেয় কেন্দ্রের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যকর অবস্থান সম্পর্কে অবহিত হন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন