পাতকুয়ার সেচে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

666

পাতকুয়া

শেরপুর: শেরপুরের নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর একান্ত প্রচেষ্টায় কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা)’র অর্থায়নে নির্মিত ডাগওয়েল (পাতকুয়া)’র সেচে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।

নকলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চরমধুয়া ও চরঅষ্টধর ইউনিয়নের ডেবুয়ারচর এলাকায় একটি করে এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরও ১১টিসহ মোট ১৩টি পাতকুয়ার আওতায় তিন শতাধিক একর জমিতে বিনা খরচে সেচ সেবা দেওয়া হচ্ছে। এতে করে পাঁচ শতাধিক কৃষি পরিবার উপকৃত হচ্ছেন।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)’র ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের বাস্তবায়নে ওইসব পাতকুয়া স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি পাতকুয়া নির্মাণে প্রাকল্পিক ব্যয় হয় ৯ লাখ ৮২ হাজার টাকা করে। সে হিসাব মতে ১৩ টি পাতকুয়ায় সরকার ১২ কোটি ৭৬ হাজার ৬০০ টাকা খরচ করে। ওইসব কুয়ার সেচের আওতায় বছরে কৃষকদের প্রায় কোটি টাকা বেঁচে যাচ্ছে। ফলে প্রতিবছর পাতকুয়ার সেচের সুবিধা ভোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে আগামী ৭ কি ৮ বছরেই সরকারের ব্যয় হওয়া টাকার চেয়ে বেশি সুবিধা ভোগ করে ফেলবেন কৃষকরা।

পাতকুয়াগুলো সৌর শক্তি ধারা পরিচালিত হওয়ায় এর স্থায়ীত্বকাল অনেক বেশি। তাই সুবিধা ভোগী কৃষকরা বিনা খরচে দীর্ঘদিন পাতকুয়ার সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। বিশেষ করে বোরো আবাদে ও শীতকালীন শাক সবজি চাষে পাতকুয়ার সেচে কৃষকরা বেশি উপকৃত হচ্ছে।

প্রতিটি পাতকুয়ার আওতায় ৩০টি কৃষক পরিবারের অন্তত ১৫০ জন করে উপকারভোগীর সুবিধা ভোগ করে লাভবান হচ্ছে। ফলে কমবেশি ২ হাজার উপকার ভোগী তারা পাচ্ছেন বিনা মূল্যে সেচ সুবিধা।

শেরপুর বিএডিসি’র সহকারী প্রকৌশলী শাহ কিবরিয়া মাহবুব তন্ময় জানান, পাতকুয়া গুলো ৫৬ ইঞ্চি ব্যস বিশিষ্ট, এটিতে ১৩০ ফুট পাইপের মাধ্যমে ৩ কিলো ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন মোটর দ্বারা পানি উত্তোলন করা হয়। এতে ৪ হাজার ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ১৬টি সোলার প্যানেল (প্রতিটি প্যানেল ২৫০ ওয়াট) ছাড়াও রয়েছে ৩ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ট্যাংক, যেখানে বৃষ্টির পানিও ধারণ করা হয়। বজ্রপাতের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে রয়েছে বজ্রপাত নিরোধক যন্ত্র।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পরেশ চন্দ্র দাস বলেন, আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির মধ্যে পাতকুয়া কৃষকদের বেশি উপকারে আসছে। বোরো আবাদে ও শুষ্ক মৌসুমে বা শীতকালীন শাক সবজি চাষে এর সুবিধার মাত্রা কল্পনাতীত। তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর বিভিন্ন মহৎ উদ্যোগের মধ্যে এই ডাগওয়েল বা পাতকুয়া একটি। মন্ত্রী মহোদয়ের সুচিন্তিত কাজের ফসল ভোগ করছেন নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অনেক কৃষক।

বিএডিসি হিমাগোরের উপপরিচালক (টিসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর একান্ত প্রচেষ্টায় ও তাঁর কাবিটা প্রকল্পের অর্থায়নে এবং বিএডিসি’র ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের বাস্তবায়নের ফলে কৃষকরা আজ লাভবান হচ্ছেন। বিনামূল্যে সেচ সুবিধা পেয়ে সুবিধাভোগী কৃষকরা বেজায় খুশি।

শেরপুর খামারবাড়ীর উপপরিচালক কৃষিবিদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে কৃষি খাতে। আমরা আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছি। বিএসএস।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন