বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে উন্মুক্ত জলাশয়ে খাঁচায় মাছ চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন মৎস্যচাষিরা। ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্প’ এর সহযোগিতায় বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জে পরীক্ষামূলকভাবে এই মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে।
মোরেলগঞ্জ মৎস্য অধিদফতরের সহযোগিতায় উপজেলার হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের গুয়াবাড়ীয়া গ্রামে মাছ চাষের এই পদ্ধতি চাষিদের আগ্রহী করে তুলেছে। কারণ এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে স্বল্প ব্যয়ে কম সময়ে বেশি লাভবান হওয়া যায়।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার বিশ্বাস বলেন, ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় গুয়াবাড়ীয়া গ্রামের ২০ জন প্রান্তিক চাষিকে একত্রিত করে একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় চাষিদের নামে একটি যৌথ ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। সেখান থেকে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করা হয়। মাছ বিক্রির লভ্যাংশও ওই হিসাবে জমা হয়। পরে ওখান থেকে চাষিরা টাকা ভাগ করে নেয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, চাষিদের ওই এলাকার গুয়াবাড়ীয়া খালে উন্মুক্ত জলাশয়ে ১০টি খাঁচা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। নেট ও নেটের জাল, বাস ও প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে বিশেষভাবে এ খাঁচা তৈরি করা হয়। প্রতিটি খাঁচা ২০ ফুট লম্বা ও ১০ ফুট চওড়া। একটি খাঁচা তৈরি করতে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। খাঁচাগুলো ১০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়।
তিনি বলেন, প্রতিটি খাঁচায় ৮০০ থেকে এক হাজার তেলাপিয়ার পোনা চাষ করা যায়। তিন মাস পরে পোনাগুলো বিক্রি করা যায়। এতে প্রতিটি খাঁচা থেকে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব হয়।
গুয়াবাড়ীয়া গ্রামের মৎস্য চাষি সমিতির সভাপতি আবুবকর ছিদ্দিক বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসের সহযোগিতায় আমরা এলাকায় ১০টি খাঁচায় তেলাপিয়ার চাষ করি। খাঁচায় চাষ করার কারণে পরিমাণমত খাবার দেওয়া যায়। মাছের কোনো সমস্যা হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। যার ফলে লাভও ভাল হয়।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিয়া হায়দার চৌধুরী বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে চাষের কারণে মাছের মৃত্যুহার অনেক কম থাকে। এজন্য খাঁচায় মাছ চাষ খুবই লাভজনক। মাত্র তিন মাসেই চাষিরা তাদের মাছ তুলতে পারেন। খাঁচায় মাছ চাষ করে বিনিয়োগের প্রায় ৪০ শতাংশ লাভ করা সম্ভব। এসবি
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন