এই সবজিটিকে অনেকে ফুলকপি বলে ভুল করেন। মনে করেন রঙটা অন্যরকম। কিন্তু আসলে একটা ব্রোকলি। এই সবজির চাষ এখনো ততোটা জনপ্রিয় হয়নি। তবে শহরের মানুষরা এটা খুব ভালোভাবে চেনে। চাইলে বাড়ির আঙিনায়, বারান্দায় বা ছাদে টবে করে ব্রোকলি চাষ করতে পারেন। আসুন জেনে নিই ব্রোকলির চাষ পদ্ধতি।
জাত নির্ধারণ: বিভিন্ন বীজ কোম্পানি ব্রোকলির সাধারণ ও শঙ্কর জাতের বীজ বাজারজাত করছে। বাজার থেকে ভালো জাতের বীজ নির্বাচন করতে হবে।
কখন লাগাবেন: সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস ব্রোকলি চাষের উপযুক্ত সময়। তাই আগস্ট মাসের পরই জমি প্রস্তুত করতে হয়। পরে বীজতলায় ব্রোকলির বীজ বুনতে হয়।
মাটি তৈরি: নরম ও ঝুরঝুরে করতে হবে। মাটি সব সময় নরম তুলতুলে থাকলে সব ধরনের সবজি ভালো ফলন দেয় ও তাড়াতাড়ি বাড়ে। সারাদিন রোদ থাকে এমন স্থান নির্বাচন করবেন।
সার প্রয়োগ: পরিমাণমতো গোবর, টিএসপি ও খৈল দিয়ে সার ও মাটি ভালো ভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। অথবা পাতা পচা সার বা গোবর সার ১ ভাগ, বালু ১ ভাগ ও মাটি ২ ভাগ মিশিয়ে বীজতলা তৈরি করে নিতে পারেন।
চারা: ভালো ফলন পেতে হলে বীজতলায় চারা তৈরি করে পরে মূল টবে লাগাতে হবে। চারা চেনার জন্য যে বিষয় গুলো খেয়াল রাখবেন, তা হলো চারার উচ্চতা ৮-১০ সেমি, ৫-৬টি সবল পাতা ও গাঢ় সবুজ বর্ণ।
চারা রোপন: বীজ রোপণের পর চারা গজাতে ৩-৪ দিন সময় লাগে। ৮-৯ দিন বয়সে চারা মূল টবে রোপণের উপযুক্ত হয়। তবে ৩-৪ সপ্তাহের সুস্থ চারা সার ও মাটি ভরা টবে লাগালে ভালো হয়। উপযুক্ত টব নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন, যেন ছোট না হয়ে যায়। তাই ৫ লিটার পাত্রের সমান টবে লাগাবেন।
পানি সেচ: প্রথম ৪-৫ দিন পর্যন্ত একদিন অন্তর অন্তর পানি দিতে হবে। পরবর্তীতে ৮-১০ দিন অন্তর বা প্রয়োজন অনুযায়ী সেচ দিলেই চলবে।
পরিচর্যা: টব সব সময় আগাছা মুক্ত রাখুন। মাটি ঝুরঝুরে করে দিন। পরিমাণমতো জৈব সার ব্যবহার করুন। সার প্রয়োগের পর পানি দিন।
পোকা দমন: জাব পোকা ও শুঁয়ো বেশি হলে রিডেন, মার্শাল বা নাইট্রো স্প্রে করা যেতে পারে। তবে তা কোন কৃষি কর্মকতার পরামর্শ অনুযায়ী করলে ভালো হয়।
ফসল সংগ্রহ: চারা রোপণের ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাসের মধ্যে খাবার উপযোগী হয়। সংগ্রহের সময় ফুলের উপরের অংশটা সাবধানে কেটে নিবেন। তাহলে পাতার গোড়া থেকে আবার ফুল বের হবে, যা পরবর্তীতে সংগ্রহ করতে পারবেন।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন