ফরমালিনমুক্ত ফল সংরক্ষণ যন্ত্র উদ্ভাবন করলো বারি

293

ফরমালিন-ডন্ত্র6c

ফল সংরক্ষণে এবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) আবিষ্কার করেছে ফলশোধন যন্ত্র। এই যন্ত্রের সাহায্যে ১০ থেকে ১২ দিন পর্যন্ত ফল অনায়াসে সংরক্ষণ করা যাবে স্বাস্থ্যসম্মত পদ্ধতিতে।

বারি সূত্র জানায়, ফলমূলের জীবনকাল কম এবং পচনশীল। যেমন আম সাত থেকে আটদিন রাখা যায় না, কলাও দ্রুত পচে যায়। আমাদের দেশে ফল সংগ্রহের সময় ৩০ ভাগ অপচয় হয়। এই অপচয় রোধে অনেক সময় ফরমালিন ব্যবহার করা হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

ফল সংরক্ষণে ও অপচয় রোধে রাসায়নিক দ্রব্য ছাড়া গরম পানিতে শোধন করে সংগ্রহ করা যায়। এ লক্ষ্যে বারি ফলশোধন নামক যন্ত্র আবিষ্কার করেছে।

যন্ত্রের মাধ্যমে দুই কিলোওয়াটের ১০টি বৈদ্যুতিক হিটারের মাধ্যমে পানি গরম করা হয়। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে জন্য রয়েছে ডিজিটাল তাপ নিয়ন্ত্রক।

ফলভর্তি প্লাস্টিক ক্রেট বহনের জন্য মোটরচালিত কনভেয়ার রোলার ব্যবহার করা হয়। যন্ত্র চালাতে চারজন শ্রমিক প্রয়োজন। যন্ত্রের মাধ্যমে ফলকে সুষমভাবে ৫৩ থেকে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৫ থেকে ৭ মিনিটে শোধন করা যায়। শোধন করা ফল ১০ থেকে ১১ দিন টাটকা থাকে, ফলের গায়ের রং উজ্জ্বলও থাকে। যন্ত্রটি পরিচালনা করা সহজ, শোধন খরচও কম।

যেমন ঘণ্টায় ১ হাজার কেজি আম ও ৬শ কেজি কলা সংগ্রহ করা যায়। প্রতি কেজি আম সংগ্রহে ৬০ পয়সা এবং কলা সংগ্রহে ৮৩ পয়সা খরচ পড়বে। একটি বড় শোধনাগারের দাম ২ লাখ ৫০ হাজার।

বারির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সেলিম রেজা মল্লিক বলেন, “বারি ফলশোধন যন্ত্রে পরিষ্কার পানি দিয়ে চৌবাচ্চাটি এমনভাবে পূর্ণ করতে হবে যেন ১০ সেন্টিমিটার খালি থাকে। হিটারগুলো বৈদ্যুতিক তারের সাহায্যে প্যানেল বোর্ডে যুক্ত করতে হবে। পানির তাপমাত্রা নির্দিষ্ট মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর পানি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় উঠে।”

তিনি আরও বলেন, “এরপরে রোলার চালানোর জন্য মোটর চালু করতে হবে। এরপর জলাধারের এক প্রান্ত থেকে ফলভর্তি প্লাস্টিকের ঝুড়ি পানির মধ্য দিয়ে রোলারে বসিয়ে দিতে হবে। এভাবেই অনবরত ফল ভর্তি ঝুড়ি রোলারের উপর বসিয়ে শোধন করা যাবে। দ্রুত ফল শুকানোর জন্য বৈদ্যুতিক পাখা ব্যবহার করা যাবে। এভাবে ১০ থেকে ১২ দিন ফল সংরক্ষণ করা যাবে।”

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন