পুকুরে রুই মাছের সঙ্গে মলা ও পুঁটির মিশ্র চাষ পদ্ধতি

1568

রুই-মাছ

বাংলাদেশ এখন মৎস্য চাষে বিপ্লব ঘটেছে। সারা পৃথিবীর মধ্যে মাছ উৎপাদনে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে। তাই এ খাতের সম্ভাবনা অনেক বেশি। আপনি যদি পুকুরে রুই জাতীয় মাছ চাষ করতে চান তার সাথে পুঁটি বা মলা জাতীয় মাছও সহজে চাষ করতে পারেন। আর এতে আপনি বেশি লাভবান হতে পারবেন। আসুন যারা শুরু করতে চাচ্ছেন তারা জেনে নিন কিভাবে রুই জাতীয় মাছের সাথে মলা ও পুঁটি মাছের চাষ করবেন।

পুকুর বা জলাশয় নির্বাচন:

দো-আঁশ ও এঁটেল দোআঁশ মাটির পুকুর ভালো। পুকুর/জলাশয় বন্যামুক্ত এবং মাঝারী আকারের হলে ভালো হয়। পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পড়ে এমন পুকুর নির্বাচন করা উচিত। পানির গভরীতা ১-১.৫ মিটার হলে ভালো হয়।

পুকুর প্রস্তুতি:

পাড় মেরামত ও আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। রাক্ষুসে ও ক্ষতিকর প্রাণী অপসারণ করতে হবে। শতাংশে ১ কেজি করে চুন প্রয়োগ করতে হবে। চুন প্রয়োগের ৭-৮ দিন পর শতাংশ প্রতি ৫-৭ কেজি গোবর ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫০ গ্রাম টিএসপি সার দিতে হবে।

পোনা মজুদ, খাদ্য ও সার প্রয়োগ:

শতাংশ প্রতি ১০-১৫ সে. মি. আকারের ৩০-৩২ টি রুই জাতীয় পোনা এবং ৫-৬ সে. মি. আকারের ৬০ টি মলা ও ৬০ টি পুটি মাছ মজুদ করা যায়। মাছের পোনা মজুদের পরদিন থেকে পোনার দেহের ওজনের শতকরা ৫-১০ ভাগ হারে সম্পুরক খাবার হিসেবে খৈল, কুড়া, ভূষি দেয়া যেতে পারে। গ্রাস কার্পের জন্য কলাপাতা, বাধা কপির পাতা, নেপিয়ার বা অন্যান্য নরম ঘাস দেয়া যেতে পারে। মলা-পুঁটি মাছের জন্য বাড়তি খাবার দরকার নাই। প্রাকৃতিক খাবার জন্মানোর জন্য পোনা ছাড়ার ১০ দিন পর শতাংশ প্রতি ৪-৬ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।

মাছ আহরণ:

পোনা মজুদের ২ মাস পর হতে ১৫ দিন পর পর বেড় জাল দিয়ে মলা-পুঁটি মাছ আংশিক আহরণ করতে হবে। ৭৫০-৮০০ গ্রাম থেকে বেশী ওজনের কাতল ও সিলভার কার্প মাছ আহরণ করে সমসংখ্যক ১০-১২ সে. মি. আকারের পোনা পুনরায় মজুদ করতে হবে। বছর শেষে চূড়ান্ত আহরণ করা যেতে পারে।

অতএব আপনার ইচ্ছাশক্তি, শ্রম আর কিছু সাধারণ জ্ঞানই পারে আপনাকে মৎস্যখাতে সফলতা এনে দিতে। দেরি না করে শুরু করুন আর সফলতা অর্জন করুন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন