নওগাঁয় ভুট্টাক্ষেতে ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকার আক্রমণে দিশেহারা চাষিরা

819

600

আব্দুর রউফ রিপন, নওগাঁ থেকে: নওগাঁর আত্রাইয়ে ভুট্টা ক্ষেতে ফল আর্মি ওয়ার্ম নামে ফসল বিধ্বংসী নতুন এক পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে ছড়িয়ে পড়েছে উপজেলার প্রায় প্রতিটি মাঠে। কীটনাশক দিয়েও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।

দ্রুত প্রতিরোধ করা না গেলে বড় ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষক এমনটিই ধারণা করছেন তারা।

এদিকে, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছে না এমনটি অভিযোগ কৃষকদের। ফলে কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের জাতোপাড়া, ভোঁপাড়া ইউনিয়নের মহাদিঘী, হাটকালুপাড়া ইউনিয়নের কিছু অংশ, আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের শুটকিগাছা, বেওলা, চৌবাড়ি, পাঁচুপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার ভুট্টা ক্ষেতে দেখা দিয়েছে ফল আর্মি ওয়ার্মের আক্রমণ। গাছের পাতা থেকে শুরু করে কাণ্ড পর্যন্ত খেয়ে ফেলছে এই পোকা। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ক্ষেতের পরিমাণ। শত শত হেক্টর ফলস নষ্ট হতে চলেছে। কোনো প্রতিষেধকই কাজে আসছে না বলে দাবি করছেন চাষিরা।

অন্যান্য ল্যাদা পোকার চেয়ে আলাদা ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকা। পরিনত বয়সের একটি পোকা অসংখ্য বাচ্চা দেয়। দিনে গাছের কাণ্ড ও মাটিতে থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে ছড়িয়ে পড়ে পুরো গাছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, কীটনাশক দিয়ে এ পোকা দমন সম্ভব নয়। পোকার আক্রমণ শনাক্ত করা গেলে প্রতিরোধ করা যেতে পারে বলছেন কর্মকর্তারা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেবে, ভুট্টা আবাদ লাভজনক হওয়ায় উপজেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়েছে। ৪৬ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষ হয়েছে ৫১ হাজার হেক্টর জমি। তবে ফল আর্মি ওয়ার্ম দমন করা না গেলে বড় ক্ষতি হবে কৃষকের।

এ ব্যাপারে উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের জাতোপাড়া গ্রামের কৃষক মুনির হোসেন ফার্মসঅ্যান্ডফার্মারকে বলেন, আমারা কৃষক, ফসলই আমাদের জীবিকানির্বাহের এক মাত্র অবলম্বন। আর এ ফসল যদি ফল আর্মি ওয়ার্মের কারণে নষ্ট হয় তাহলে আমরা বড় ধরণে ক্ষতির সম্মুখীন হব। এ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের কোন প্রকার সাহায্য-সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ভোঁপাড়া ইউনিয়নের মহাদিঘী গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের ফসলের এত বড় ক্ষতি হচ্ছে তারপরও এখন পর্যন্ত কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা পাচ্ছি না। নিজেরাই কিছু কিটনাশক দিয়ে এ পোকার হাত থেকে বাঁচতে চেষ্টা করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম কাউছার হোসেন জানান, এই পোকা আমাদের এলাকায় এই প্রথম দেখা দিয়েছে। ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকার আক্রমণে দেরিতে চাষ করা ভুট্টার ক্ষেতে দেখা গেছে।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন