‘বাংলাদেশে দরকার বাস্তবসম্মত ও প্রায়োগিক গবেষণা’

309

শেকৃবি
শেকৃবি প্রতিনিধি: রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এমএস প্রোগ্রামে গবেষণা সূচনা কর্মশালা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার ( ২৩ এপ্রিল) মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল ভবনস্থ এএসভিএম সেমিনার গ্যালারিতে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. পরিমল কান্তি বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কেবিএম সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর প্রফেসর ড. মো. সেকেন্দার আলী, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আনোয়ারুল হক বেগ এবং এনিম্যাল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম।
এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টেফিনেট-সিডিসি আটলান্টার বাংলাদেশে নিযুক্ত ওয়ান হেলথ ফোকাল পয়েন্ট ড. একেএম মাহবুবুল হক।

কর্মশালার শুরুতে ড. কেবিএম সাইফুল ইসলাম বিভাগীয় গবেষণার সক্ষমতা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মেডিসিন এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের ব্যপ্তি ও সংশ্লিষ্টতা উপস্থাপন করেন।

তিনি জানান, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সাইন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং উক্ত অনুষদের মেডিসিন এন্ড পাবলিক হেলথ বিভাগ ২০১৩ সালের মে মাসে যাত্রা শুরু করে। সুচনালগ্ন থেকেই বিভাগটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে শিক্ষা ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও-ইউএন), ইউএসএইড, রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল-ইউকে, আইইউসিএনসহ বিশ্বের ২য় প্রাচীন ভেটেরিনারি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের এনভা’র সাথে বিভাগটি সফলভাবে কাজ করে আসছে।

তিনি আরো জানান, বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এই বিভাগের মাধ্যমেই বিশ্বখ্যাত এনিমেল হেলথ কোম্পানি সেভা সান্তে এনিম্যালি’র সহযোগিতায় বাংলাদেশের ৯০ জন প্রাণি চিকিৎসককে আন্তর্জাতিক মানের স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা প্রদান করা হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সংস্থা রিলিফ ইন্টারন্যাশনাল-ইউকে’র সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র জুনোটিক ডিসিস রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন সেন্টার এই বিভাগের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুদানে বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদনের অভিজ্ঞতা এই বিভাগের আছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই বৎসরের জানুয়ারি-জুন সেশনে তিন জন শিক্ষার্থী ভর্তির মাধ্যমে অত্র বিভাগে এমএস প্রোগ্রাম চালু করা হয়। ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বাস্তবসম্মত ও প্রায়োগিক গবেষণার বিষয়, কর্মসূচি, কর্মপদ্ধতি ও কর্মপরিকল্পনার ব্যাপারে কর্মশালায় বিষদ আলোচনা হয়। বলা হয়, এমএস প্রোগ্রামের গবেষণা একজন গবেষকের জন্য প্রারম্ভিক যাত্রা। এটি তার শেখার সময়। তাই ভাল গবেষক পেতে এই সময়েই তাকে সুচারুরূপে হাতে-কলমে গবেষণা শেখাতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজরের দায়িত্ব অনেক।

কর্মশালায় বক্তারা প্রাণীর রোগ-বালাই ও চিকিৎসার পাশাপাশি মানবস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বাস্তবসম্মত ও প্রায়োগিক গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন।

বক্তারা বলেন, আধুনিক ধ্যান-ধারণায় শুধুমাত্র প্রাণিস্বাস্থ্যের দিকে লক্ষ্য রাখাই পর্যাপ্ত নয়, প্রাণিস্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানবস্বাস্থ্যও যাতে সমান গুরুত্ব পায় সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য ওয়ান হেলথ ধারণাকে সামনে রেখে গবেষণা পরিকল্পনা করার বিষয়ে বক্তারা মত প্রকাশ করেন।

কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এমএস শিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক গবেষক অংশগ্রহণ করেন।

ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন