বরগুনা: জেলায় বিগত বছরগুলোর মতো এ বছরও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। তরমুজ চাষে গত কয়েক বছরের ধারাবাহিক সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে গ্রামের কৃষকরা ব্যাপক হারে তরমুজ ফলিয়েছেন। এলাকার কৃষকদের কাছে ধানের পরেই এখন তরমুজ দ্বিতীয় প্রধান ফসল হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।
কৃষিবিদরা জানিয়েছেন, মাত্র আড়াই মাসে তরমুজ চাষ করে মোট উৎপাদন খরচের চারগুণ আয় করা যায় বলে কৃষকদের মধ্যে তরমুজ চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আবাদি নিচু জমিতে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়া এবং ঝড়ের সাথে শিলাবৃষ্টির শংকা রয়েছে। প্রাকৃতিক প্রতিকুলতায় না পড়লে এ মৌসুমেও তারা বড় অংকের লাভ আশা করছেন।
বরিশাল কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জমিতে লবণাক্ততার মাত্রা গড়ে ২ থেকে ১০ ডিএস মিটার। ফসল উৎপাদনের জন্য জমিতে ২ ডিএস সহনীয় মাত্রা। এর মধ্যেই স্থানীয় কৃষকরা তরমুজের চাষ করে সাফল্য পাচ্ছেন। মাটি পরীক্ষা করে কৃষকদের মধ্যে ভালো জাতের বীজ সরবরাহ করতে পারলে ফলন বাড়বে আরও অনেক গুণ।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, বরগুনা ও পটুয়াখালী জেলা মিলে এ মৌসুমে তরমুজের আবাদ হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন।
বরগুনা আমতলী উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কৃষি দপ্তরের সরাসরি তত্ত্বাবধানে জেলায় সবচেয়ে বেশি পরিমান জমি অর্থাৎ ৩৫শ’ হেক্টরে তরমুজের আবাদ হয়েছে শুধুমাত্র আমতলীতেই। যা গত বছরের তুলনায় ৫শ হেক্টর বেশি।
কৃষকদের সাথে কথা বলে ও বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, এখানকার উৎপাদিত তরমুজ দেশের বিভিন্ন স্থানে রফতানি হচ্ছে। কৃষকরা দরও পাচ্ছেন আশানুরূপ। স্থানীয় বাজারে খুচরা মূল্যে ১৫ কেজি ওজনের একেকটি তরমুজ গড়ে তিনশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বরগুনার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তা এসএম বদরুল আলম জানিয়েছেন, গত ১২ বছর থেকে এই অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে তরমুজের আবাদ ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। ভালো উৎপাদনের ধারাবাহিকতায় তরমুজের আবাদ ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
বরিশাল কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলিমুর রহমানের মতে, প্রাকৃতিক বৈরিতা থেকে তরমুজখেত রক্ষায় কৃষকদের নতুন নতুন কৌশল ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হলে এই খাতে আরও সফলতা আনা সম্ভব।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/মোমিন