ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার ডেস্ক: নিরাপদ পোল্ট্রি পালন ও হিটস্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পোল্ট্রি খামারিদের কারিগরি জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং আনোয়ার গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আনোয়ার সিমেন্ট শিট লিমিটেড।
গত ৪ আগস্ট রোববার মতিঝিলে অবস্থিত আনোয়ার গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চিফ মার্কেটিং অফিসার একেএম জাবেদ এবং বিপিআইসিসি’র সচিব দেবাশিস নাগ নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার গ্রুপের ডিরেক্টর, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, হাফিজুল আদিথ ও জেনারেল ম্যানেজার কাঞ্চন সাহা, আনোয়ার সিমেন্ট শিট লিমিটেডের চিফ কনসালট্যান্ট ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন; আনোয়ার সিমেন্ট শিট লিমিটেডের কনসালট্যান্ট ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক পার্থরথী সরকার, বিপিআইসিসি’র যোগাযোগ ও মিডিয়া উপদেষ্টা মো. সাজ্জাদ হোসেন এবং অফিস এক্সিকিউটিভ আবু বকর প্রমুখ।
চুক্তি স্বাক্ষর প্রসঙ্গে বিপিআইসিসি’র সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, “নিরাপদ ডিম ও মুরগির মাংস প্রাপ্তির অন্যতম পূর্ব শর্ত হচ্ছে জীবানুমুক্ত পরিবেশে পোল্ট্রি পালন এবং স্বাস্থ্যসম্মত পোল্ট্রি পণ্যের উৎপাদন নিশ্চিত করা।”
মশিউর রহমান বলেন, “আমাদের দেশের চরম আবহাওয়ার কারণে রোগজীবানুর সংক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। পোল্ট্রি ব্রিড ও পোল্ট্রি বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে অনেক খামারি না বুঝে কিংবা অন্যের ভুল পরামর্শে অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবহার করে থাকেন। ফলে অনেকেই আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছেন না। সে কারণেই আধুনিক পোল্ট্রি খামার ব্যবস্থাপনা ও জীবনিরাপত্তা বিষয়ে খামারিদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ানো খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। এতে একদিকে যেমন অপ্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবহার ও উৎপাদন খরচ কমবে, খামারিরা লাভবান হতে পারবেন; অন্যদিকে তেমনি ভোক্তাদের জন্য নিরাপদ ডিম ও মাংসের নিশ্চয়তা বিধান করা সম্ভব হবে।”
তিনি আরো বলেন, চলতি বছরে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নিরাপদ পোল্ট্রি পালন বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলায় একটি জরিপকার্যও পরিচালনা করা হচ্ছে। যার ওপর ভিত্তি করে ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালি খামারের সংখ্যা, বার্ডের সংখ্যা, উৎপাদন সক্ষমতা ও প্রকৃত উৎপাদন প্রভৃতি বিষয়ে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে একটি ডাটাবেট তৈরির কাজও একই সাথে এগিয়ে চলছে।
মসিউর রহমান বলেন, “আনোয়ার সিমেন্ট শিটের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির আওতায় খামারিদের জন্য প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং নিরাপদ পোল্ট্রি পালন ও হিটস্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।”
এ প্রসঙ্গে আনোয়ার গ্রুপের চিফ মার্কেটিং অফিসার একেএম জাবেদ বলেন, “সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আনোয়ার গ্রুপ একটি মহতী উদ্যোগের সাথে যুক্ত হলো।”
তিনি বলেন, “সমৃদ্ধ দেশ ও টেকসই উন্নয়নের পূর্ব শর্তই হচ্ছে সবার জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। সে বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে দেশের পোল্ট্রি শিল্প।”
ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, “পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চায় আনোয়ার সিমেন্ট শিট লিমিটেড। বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে খুবই দ্রুত গতিতে আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে। হিস্ট স্টেস ম্যানেজমেন্টের জন্য প্রযুক্তি নির্ভর শেড তৈরি হচ্ছে কিন্তু আমাদের দেশের সাধারণ খামারিদের পুঁজির সীমাবদ্ধতার কারণে এত ব্যয়বহুল টেকনোলজির ব্যবহার প্রায় অসম্ভব। সে কারণেই খুবই সাধারণ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ে অথচ অত্যন্ত কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব পোল্ট্রি, ডেইরি ও লাইভস্টক শেড তৈরির মাধ্যমে খামারিদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে আনোয়ার গ্রুপ।”
বিপিআইসিসি’র সাথে চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে হিটস্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে খামারিদের দুশ্চিন্তা নিরসন ও নিরাপদ পোল্ট্রি উৎপাদনের মধ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে পোল্ট্রি শিল্পের উন্নয়নে অগ্রগতি অর্জিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন জনাব মোসাদ্দেক।
ফার্মসঅ্যান্ডফার্মার২৪ডটকম/ মোমিন