আরবের খেজুর গাছ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চায় জীবন আলী

803

খেজুর

নারায়ণগঞ্জের ছেলে জীবন আলী এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সৌদি আরবের আল-মাসানায় খেজুরের বাগানে কাজ করার সুবাদে বাংলাদেশে খেজুর বাগান করায় উৎসাহী হয়ে ওঠেন। নিজ গ্রামে আপন হাতে গড়ে তুলছেন আরব দেশের খেজুর গাছের নার্সারি। তাই এখন সৌদি আরবের খেজুর গাছ বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

জীবন আলী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার শম্ভুপুরা ইউনিয়নের কাজিরগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল আলী তাবু ফকিরের ছেলে।

জীবন আলী বহু দিন প্রবাস জীবন শেষে এখন সময় কাটাচ্ছেন নিজ গ্রামে। ভাবছেন মানুষের জন্য ভালো কিছু করার। দীর্ঘদিন খেজুর বাগানে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, আর সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এখন গড়ে তুলছেন মরুভূমির দেশের খেজুর গাছের নার্সারি। পরম যত্নে পরিচর্যা করে চলছেন দিনের পর পর দিন। জীবন আলী ৩ সন্তানের জনক, প্রবাসে হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারেন নি। তাই সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে ফলাতে চান সৌদি আরবের খেজুর।

বৃক্ষপ্রেমী জীবন আলী বলেন, সৌদি আরবে কাজ করার সময়ই আমি পরিকল্পনা করেছিলাম দেশে একটি খেজুর গাছের নার্সারি করবো। যেহেতু খেজুর বাগানে কাজ করেছি সেহেতু খেজুর বাগানের পরিচর্যা সম্পর্কে আমার সব কিছুই জানা ছিল। আমি সৌদি থেকে খেজুরের বীজ নিয়ে দেশে এসে নার্সারির কাজ শুরু করি। বর্তমানে আমার লাগানো বীজগুলো থেকে জন্মানো চারাগুলোর বয়স চার বছর। অন্তত ১০ বছর বয়স হলে খেজুর গাছে ফলন শুরু হবে।

নার্সারিতে গিয়ে দেখা যায়, জীবন আলী খেজুর গাছের পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত। তার নার্সারিতে প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি বিভিন্ন জাতের খেজুর গাছের চারা রয়েছে। প্রতিটি চারার মূল্য ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। মরিয়ম, এখলাস, শুক্কারি, ডেকলেট নূর ও আল-খুদরিসহ বিভিন্ন জাতের খেজুরের চারা পাওয়া যায় তার নার্সারিতে। জীবন আলী শুধু একজন বৃক্ষপ্রেমীই নয়- তিনি সংস্কৃতিমনা একজন মানুষও বটে। আপন খেয়ালে নিজে নিজেই তিনি গান রচনা করে নিজেই সুর তুলে গান গায়। ঘরে একতারা, দোতারা, বাঁঁশি ও হারমোনিয়াম সবই আছে।

জীবন আলী জানান, ১০ বছর আগে সৌদি থেকে ছুটিতে এসে কাজিরগাঁও কবরস্থানে কয়েকটি বীজ রোপণ করেছিলাম, আজ সে গাছে ফলন এসেছে। খেজুর বাগান করা একটি দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। এ ছাড়া খরচও অনেক বেশি। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেলে বাংলাদেশে আরবের খেজুর ছড়িয়ে দেয়া যাবে।

কৃষি অফিসার মনিকা আক্তার বলেন, এ বছর জীবন আলী তার খেজুরের চারা নিয়ে উপজেলা বৃক্ষমেলায় অংশ নিয়েছিল, এখানে বেশ কিছু খেজুর চারা বিক্রিও হয়েছে। বাংলাদেশে আরবের খেজুর গাছের নার্সারি নেই বললেই চলে, জীবন আলীর এ উদ্যোগ প্রশংসার যোগ্য। আমরা তার নার্সারির খোঁজ খবর নিচ্ছি। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে তাকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হবে।

ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ