এম. ওবাইদুল্লাহ, রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চাষিরা মরিচ চাষে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। চলতি বছরে দুর্গাপুরে মরিচ চাষিরা শুরুর দিকে গাছের মোড়ক নিয়ে বিপাকে পড়লেও পরবর্তীতে আবহাওয়া ও চাষ কৌশলের কারনে এ বছর বাম্পার ফলন পেয়েছে মরিচ চাষিরা। সেই সাথে মরিচের ভাল দাম পাওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে চাষিরা। অল্প পরিমাণ জমিতে মরিচ চাষে অধিক লাভবান হচ্ছেন। বিগত কয়েক বছরধরে মরিচ চাষ করে বদলে গেছে উপজেলার অনেক চাষির ভাগ্য। উপজেলার দেবীপুর, উজালখলসী, আলীপুর, হাটকানপাড়া, আমগাছী, পানানগর, জয়নগর, আলিয়াবাদ, বড়ইলসহ অনেক গ্রামে দিনদিন মরিচ চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মরিচের চাষের শুরুতেই মোড়ক রোগের কারনে চাষিরা মরিচ চাষে আগ্রহী না হলেও বিগত কয়েক বছর থেকে বদলে গেছে বিভিন্ন এলাকার দৃশ্যপট।
সরজমিনে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, উচু ও ডাঙা জমিতে মরিচের খেত। মরিচ খেতের পরিচর্যা ও গাছ থেকে মরিচ তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নারী-পুরষ ও দিন মজুররা। তবে অনেক এলাকার চাষিরা শেষ সময়ে মরিচের গাছে মোড়ক লাগায় চাষিরা তা ভেঙে দিয়ে অন্য ফসলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর গ্রামের মরিচ চাষি শফিকুল জানান, তিনি এবার ২বিঘার কিছু বেশি জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। এই পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ মণ মরিচ বাজারে বিক্রি করেছেন। যা থেকে তিনি ৭০ হাজার টাকা পেয়েছেন। যেখানে মরিচ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা প্রায়। বর্তমান বাজার মরিচের দাম একটু কম। উপজেলার উজালখলসী গ্রামের সামাদ আলী জানান, তিনি দেড় বিঘা জমি থেকে এখন পর্যন্ত ১৮ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাজারে মরিচ প্রতি মণ ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি করছেন।
গগণবাড়িয়া গ্রামের মরিচ চাষি সালাম জানান, দুর্গাপুর বাজার ছাড়াও ঢাকার পাইকাররাও এখান থেকে মরিচ কিনে নিয়ে যান। কাজেই বাজারজাত করার কোনো সমস্যা নেই। মরিচ ক্ষেতে ঠিকমতো ওষুধ প্রয়োগ না করলে পোকার উৎপাত আর মোড়ক বেশি হয়। তবে মরিচের মোড়ক প্রতিরোধে আরো কার্যকর ওষুধ ও পরামর্শ পাওয়া গেলে মরিচ চাষিরা মরিচ চাষে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, ১শ’ হেক্টর জমিতে এবার মরিচ চাষ হয়েছে। দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিমল কুমার প্রামানিক বলেন, অল্প জমিতে পরিচর্যা করে মরিচ ক্ষেত থেকে অধিক লাভ করা যায় বলে অনেকেই ঝুঁকে পড়ছেন মরিচ চাষে। কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে মরিচের আবাদ করায় এবং সাফল্য পাওয়ায় উপজেলায় দিনে দিনে মরিচ চাষের প্রসার ঘটছে।